সেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। —নিজস্ব চিত্র।
বিধানচন্দ্র রায় যখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তখন গ্রামে তৈরি হয়েছিল ওই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। শক্তিপুর থানার রামনগর-বাছড়া এবং আশপাশের গ্রামের বাসিন্দাদের ক্ষোভ, তৈরি হওয়ার পর এক সময় অন্তর্বিভাগ চালু হলেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। তারপর দীর্ঘদিন আন্দোলন করেও আজও তা ফের চালু করা যায়নি রামনগর-বাছড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
ভাগীরথীর পশ্চিম পাড়ে এবং জেলা সদর বহরমপুর থেকে প্রায় ৪০ কিমি দূরে রামনগর-বাছড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। গঙ্গার পূর্ব দিকে নদিয়া আর পশ্চিমে রামনগর-বাছড়ায় ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। লোকে অবশ্য ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে চন্দনপুর হাসপাতাল বলেই জানেন। আশপাশের কয়েকটি গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ চিকিসার জন্য প্রতিদিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, চালু হওয়ার পর কয়েক বছর এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বহির্বিভাগ এবং অন্তর্বিভাগ একসঙ্গে চালু ছিল। সেই সময় রোগীদের ভর্তি করে এখানে চিকিৎসা হত। ফলে এখনকার মতো তখন গুরুতর অসুখেও ১০ কিলোমিটার দূরের শক্তিপুর ব্লক হাসপাতাল বা ৪০ কিলোমিটার দূরে বহরমপুরে যেতে হত না স্থানীয় বাসিন্দাদের। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বর্তমানে কোনও স্থায়ী চিকিৎসক নেই। ব্লক হাসপাতাল থেকে সপ্তাহে চারদিন চিকিৎসক আসেন। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আউটডোর খোলা থাকে। তারপর কেউ অসুস্থ হলে ভরসা শক্তিপুর ব্লক হাসপাতাল। রামনগর-বাছড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ইসরাফিল শেখ বলেন, “আমাদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক সময় অন্তর্বিভাগও চালু ছিল। এখন তা বন্ধ। প্রশাসনের কাছে বহুবার দরবার করেও কিছু হয়নি। এখানে স্থায়ী চিকিৎসক নেই। এলাকার মানুষকে চিকিৎসার জন্য শক্তিপুরে ছুটতে হয়। এখান থেকে শক্তিপুর দশ কিমি দূরে।’’
করোনা আবহে জেলার কয়েকটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হাল ফিরেছে। গ্রামবাসীদের দাবি, উল্লেখযোগ্য না হলেও পরিষেবা আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে রানগর-বাছড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রেরও। aস্থানীয় বাসিন্দা কল্পনা রাজোয়ার বলেন, “পেটের যন্ত্রণায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ছুটেছিলাম। ডাক্তারবাবুর ওষুধ খেয়ে এখন ভাল আছি।’’
স্ত্রী চম্পা বিবিকে নিয়ে রামনগর-বাছড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়েছিলেন নজরুল শেখ। বাড়িতে আনাজ কাটতে গিয়ে চম্পা বিবির হাত গভীর ভাবে কেটে যায়। নজরুল বলেন, ‘‘ডাক্তারবাবুরা তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়ায় অন্যত্র যেতে হয়নি।’’ বেলডাঙা ২ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক তরুণ বারুই বলেন, “করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে ব্লকের তিনটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই ভাল পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। রামনগরে স্থায়ী চিকিৎসক শীঘ্রই আসবেন।’’