ছবি পিটিআই।
লকডাউনের সময়ে মাত্রা ছাড়া ভিড়ে এ বার রঘুনাথগঞ্জ শহরের আনাজের সদরঘাটের পাইকারি বাজার নিয়ে জটিলতা দেখা দিল। বর্তমানে শহরের সদরঘাটে সবুজদ্বীপের পাশে বাজার বসলেও বাজারের ভিড় নিয়ে আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে এই বাজার তুলে দিতে হবে । তা নিয়ে যেতে হবে লোকালয়ের বাইরে কোথাও।
সেই মতো পুলিশ ও পুরসভা বুধবার থেকে সে বাজার বসানোর সিদ্ধান্ত নেন ম্যাকেঞ্জি স্টেডিয়ামের মাঠে। কিন্তু সেখানকার বাসিন্দারাও মঙ্গলবার আপত্তি তোলেন বাজার বসানো নিয়ে। তাঁদের আপত্তির কারণ, বাজার বসলেই বহু লোকজন আসবেন সেখানে। পাশেই রয়েছে ঘনবসত্পূর্ণ এলাকা। সেক্ষেত্রে করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক রয়েছে। স্বভাবতই রঘুনাথগঞ্জ শহরের পাইকারি বাজার বসানো নিয়ে এক জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যদিও বুধবারও সে বাজার চলেছে সদরঘাটেও। বাজারে জায়গার তুলনায় ভিড় ছিল মাত্রাতিরিক্ত।
দীর্ঘ দিন ধরেই আনাজের পাইকারি বাজার বসে শহরের তুলসীবাড়ি এলাকায়। বাজারে প্রচণ্ড ভিড় হয় প্রতিদিন। অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এবং পাশেই একাধিক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। ঘনবসতি বলে সেখানে এই বিশেষ পরিস্থিতিতে বাজার বসাতে আপত্তি জানান তুলসীবাড়ির বাসিন্দারাও। পুলিশ ও প্রশাসন বাজার সরানোর সিদ্ধান্ত নেন ৫ কিলোমিটার দূরে সরকারি কিসান মান্ডিতে গত ২৬ মার্চ। কিন্তু শহর ছেড়ে বাজারের ৬০ জন পাইকারি ব্যবসায়ীর কেউই সেখানে যেতে না চাওয়ায় তা চালু করা যায়নি। পরদিনই পুলিশের মধ্যস্থতায় সে বাজার সরে যায় রঘুনাথগঞ্জ শহরের সদরঘাটে পুরসভার জমিতে। সেখানেই তিন সপ্তাহ থেকে চলছিল পাইকারি আনাজ বাজার।
জঙ্গিপুরের পুরপ্রধান মোজাহারুল ইসলাম জানান, সদরঘাটের বাসিন্দারা এলাকায় বাজার বসানো নিয়ে ঘোর আপত্তি তুলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সেই কারণেই বুধবার থেকে ম্যাকেঞ্জি স্টেডিয়ামের ঘেরা মাঠে বাজার বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ব্যবসায়ীরাও তাতে রাজি ছিলেন। কিন্তু ম্যাকেঞ্জি এলাকার অনেক বাসিন্দা প্রতিবাদ করেছেন তাতে। ফলে সেখানে সিদ্ধান্ত নিয়েও বাজার সরানো যায়নি। জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ম্যাকেঞ্জিতেই বাজার বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু সমস্যা দেখা দিয়েছে সেখানেও। কিন্তু আনাজের বাজার না বসলে সঙ্কটে পড়বেন তো শহরের মানুষই। পরিস্থিতি অনুযায়ী অনেকটাই নিরাপদ ম্যাকেঞ্জি স্টেডিয়াম।’’
ম্যাকেঞ্জি মাঠ লাগোয়া বাসিন্দাদের আপত্তির কারণ বাজারের ভিড় থেকে করোনার আতঙ্ক। পুলিশের সামনেই এই আপত্তি ওঠায় ব্যবসায়ীরাও ম্যাকেঞ্জি যাওয়ার সিদ্ধান্তে পিছিয়ে আসেন।
ব্যবসায়ীদের অন্যতম সৌরভ চট্টোপাধ্যায় জানান, সাময়িক পরিস্থিতিতে পাইকারি আনাজের বাজার শহরের কাছাকাছি সরিয়ে নিতে কোনও আপত্তি নেই ব্যবসায়ীদের। ম্যাকেঞ্জি বা সদরঘাট দু’টি জায়গাতেই সম্মতি রয়েছে সকলের। তাতে সুষ্ঠুভাবে ব্যবসা চালানো না গেলে আনাজের পাইকারি বাজার বন্ধ রাখবেন তাঁরা।