অটো থাকলেও দেখা নেই বাসের। —নিজস্ব চিত্র।
কৃষ্ণনগরে সভা করতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর তার জেরে বাস অমিল সারা জেলা জুড়ে। প্রধানমন্ত্রীর সভার জেরে চরম ভোগান্তিতে নদিয়ার সাধারণ মানুষ এবং নিত্যযাত্রীরা। যাত্রী পরিবহণের জন্য খুব কম বাস রয়েছে। বেশির ভাগ বাসই বিজেপি কর্মী সমর্থকদের দখলে। মোদীর সভার জন্য বিজেপির তরফে অগ্রিম ভাড়া নেওয়া হয়েছে বাসগুলি। বাস না মেলা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশও করেছেন নিত্য যাত্রীদের একাংশ।
বিজেপি সূত্রে খবর, কৃষ্ণনগর লোকসভাকে এ বার পাখির চোখ করতে চাইছে বিজেপি। মোদীর সভায় নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে প্রায় দু’লক্ষ কর্মী সমর্থককে আনার লক্ষ্য রয়েছে বিজেপির। কৃষ্ণনগরের সভাস্থল ছাপিয়ে গোটা শহর বিজেপি কর্মী-সমর্থকে ভরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনাও করা হয়েছে। রেলস্টেশন থেকে বাসস্ট্যান্ড, ফেরিঘাট থেকে সড়ক— কৃষ্ণনগর শহর এবং শহরতলির আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলিতে ভিড় বাড়াতে চাইছেন বিজেপির নেতারা। মোদীর সভায় লোক আনতে আলাদা আলাদা সাংগঠনিক জেলার জন্য ভিন্ন ভিন্ন পরিবহণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সমর্থকদের সভাস্থলে আনতে জোর দেওয়া হয়েছে যাত্রিবাহী বাস এবং ছোট গাড়ির উপর। সমর্থকদের সভাস্থলে আনার জন্য তুলে নেওয়া হয়েছে নদিয়ার প্রায় অধিকাংশ বাস। বিজেপি সূত্রে খবর, প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় কর্মী-সমর্থকদের জমায়েতের জন্য নদিয়ার করিমপুর, তেহট্ট, কালীগঞ্জ, নাকাশিপাড়া, পলশিপাড়া-সহ বিভিন্ন ব্লক থেকে সব মিলিয়ে ৪১২টি বাস এবং একশোর বেশি ছোট গাড়ি ভাড়া করা হয়ছে।
অন্য দিকে, মাসের প্রথম শনিবার হওয়ায় ব্যাঙ্ক থেকে শুরু করে বহু বেসরকারি ও আধা সরকারি সংস্থার দফতর খোলা থাকবে। চিকিৎসা সংক্রান্ত জরুরি কাজেও বেরোতে হতে পারে মানুষকে। কিন্তু মোদীর সভার কারণে বেসরকারি বাস তুলে নেওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
শনিবার ভোর থেকে পেটে ব্যথা নিয়ে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন জেসমিনা খাতুন। সকালে চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, পরীক্ষার জন্য তাঁকে কৃষ্ণনগরে যেতে হবে। কিন্তু কৃষ্ণনগর যাওয়ার জন্য কোনও বাস পাননি তিনি। জেসমিনার কথায়, ‘‘সকাল ছ’টা থেকে হাসপাতাল মোড়ে অপেক্ষা করছি। একটি বাসও পায়নি। খুব অসহায় লাগছে।’’
অন্য দিকে, নদিয়া বাসমালিক সমিতির সভাপতি কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর সভার কারণে বহু বাস তুলে নেওয়া হয়েছে। যে বাসগুলি থাকবে তা দিয়ে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা হবে।’’
বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাসের কথায়, ‘‘সাধারণ যাত্রীদের হয়রানি হবে এ কথা মানছি। প্রধানমন্ত্রীর সভা তো জনসাধারণের জন্যই। সাধারণ মানুষ হাসিমুখে এক দিনের সমস্যা মেনে নেবেন। আমরা তাঁদের কাছে সহযোগিতা চাইছি।’’