মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
খবরের কাগজে দেখেছেন তাঁদের দলিল দেওয়া হবে। কয়েক দিন আগে মুখ্যমন্ত্রীও জেলায় এসে এ বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু এখনও এ নিয়ে সরকারি আধিকারিকরা তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ না করায় দুশ্চিন্তায় কুপার্স ক্যাম্পের বাসিন্দাদের একাংশ।
শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা দেবাশিস মণ্ডল বলেন, “১৯৮৪ সাল থেকে শুনে আসছি, আমাদের দলিল দেওয়া হবে। কয়েকবার খবরের কাগজেও দেখলাম। আবার মুখ্যমন্ত্রী জেলায় এসে আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু এখনও কেউ এসে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। বুঝতে পারছি না কী হবে।” ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বাচ্চু মালি বলেন, “এই শহরে আমাদের মতো অনেক পরিবার রয়েছে, যারা দলিল পায়নি।’’
তবে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ওই এলাকার সকলেই দলিল পাবেন। অতিরিক্ত জেলা শাসক (ভূমি সংস্কার) নারায়ণচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, “উদ্বাস্তু কলোনিতে সার্ভে করার কাজ শুরু হয়েছে। যাঁরা দলিল পাননি, তাঁরা অবশ্যই পাবেন। সকলকে ‘ফ্রি হোল্ড টাইটেল ডিড’ দেওয়া হবে।” পাশাপাশি তিনি জানান, দলিল পাননি, কুর্পাস ক্যাম্পে এমন পরিবার কম আছে। কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের জমিতে বসবাসকারীদের কেউ বাদ যাবেন না। তাঁরা সকলেই দলিল পাবেন।
কুপার্স নোটিফায়েড ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাধীনতার পরে ভিটে হারিয়ে ওপার বাংলার মানুষ কুপার্স ক্যাম্পে বসবাস শুরু করেছিলেন। ১৯৯৭ সালে ১২ ওয়ার্ড বিশিষ্ট কুপার্স নোটিফায়েড এলাকা তৈরি হয়েছিল। এখানে প্রায় ৬ হাজার পরিবার রয়েছে। এর মধ্যে কমবেশি ১২০০ পরিবার কেন্দ্রীয় সরকারের জমিতে বসবাস কারে। সেই পরিবারগুলির পাশাপাশি রাজ্য সরকারের জমিতে বসবাসকারী পাঁচশোর মতো পরিবার এখনও জমির দলিল পায়নি। বাকিরা দলিল পেয়ে গিয়েছে।
সম্মিলিত কেন্দ্রীয় উদ্বাস্তু পরিষদের জেলা সম্পাদক আশোক চক্রবর্তী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী দলিল দিতে চাইছেন, সেটা ভাল কথা। আমরা দলিলের সঙ্গে জমির পর্চা দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। কেন্দ্রীর সরকারের জমিতে শুধু দলিল দিলে হবে না। পর্চাও দিতে হবে। তাহলে বুঝব মুখ্যমন্ত্রীর কথা ও কাজের মধ্যে পার্থক্য নেই।”
কুপার্স শহর বিজেপি সভাপতি দীপক দে বলেন, “এ সব রাজনীতি হচ্ছে, আর কিছুই নয়। এখন ওদের উদ্বাস্তুদের কথা মনে পড়েছে। এত দিন কোথায় ছিল? কেন্দ্র সরকারের জায়গায় কী ভাবে ওরা দলিল দেবে, তা বুঝতে পারছি না।”