জমেছে নোংরা জল।—নিজস্ব চিত্র।
একদা শহরের সৌন্দর্যে মজেছিলেন লর্ড ক্লাইভ। লালবাগকে লন্ডনের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। সেই শহরের নিকাশি নালার আকার-আয়তন এত বছর পর প্রয়োজনের তাগিদে বৃদ্ধি পাওয়ার কথা। বৃদ্ধি তো পায়ইনি, উল্টে জবরদখলের কারণে নালা কমেছে। ফলে ভুগছে ঐতিহাসিক শহর। নবাব মিরজাফরের দ্বিতীয় স্ত্রী মুন্নি বেগম প্রতিষ্ঠিত ঐতিহাসিক চকশাহি মসজিদ লাগোয়া নিকাশি নালা উপচে নোংরা জল আসছে মসজিদ প্রাঙ্গণে। সেই নোংরা জল মাড়িয়েই নমাজ পড়তে যেতে হয়।।
ওই মসজিদের ইমাম মওলানা সৈয়দ এহেসান নকবি বলেন, ‘‘দেহ সমাধিস্থ করার আগে মসজিদের সামনের প্রাঙ্গণে রাখা হয়। সেখানে মৃতের জন্য প্রার্থনা (জানাজা) করা হয়। এমন একটি পবিত্রস্থান সাফসুতরো করা হয় না।’’ তিনি জানান, পশুপাখির বিষ্ঠা ও আবর্জনায় নোংরা হয়ে থাকা ওই জায়গায় মৃতদেহ রাখতে হয়। নিকাশি নালাও দীর্ঘ দিন ধরে পরিষ্কার করা হয় না। ফলে ঐতিহাসিক চকশাহি মসজিদ দেখতে আসা পর্যটকদের নাকে রুমাল চাপা দিতে হয়। মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে পুরসভার কাছে আবেদন জানিয়েও সুরাহা মেলেনি।
দল বদলে সদ্য কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া পুরপ্রধান বিপ্লব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চক মসজিদ এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে আমাকে কেউ কোনও দিন কোনও কথা বলেননি। মসজিদ কমিটি থেকেও কিছু জানানো হয়নি।’’ তবে এ বার তিনি নিজে গিয়ে সরজমিনে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন বলে জানান। হাজারদুয়ারি প্যালেস ও মিউজিয়াম লাগোয়া ঐতিহাসিক ওই মসজিদ চত্বর তো বটেই, একই সমস্যায় শহরের প্রাণকেন্দ্র পাঁচরাহা মোড়। নিয়মিত নিকাশিনালা সাফাই করা যে হয় না সে কথা মানছেন খোদ পুরপ্রধান। তিনি বলেন, ‘‘বেসরকারি দোকানঘর ছাড়াও পাঁচরাহা মোড়ে নিকাশিনালা জবরদখল করে সাংসদ কোটার টাকায় গড়ে উঠেছে রিকশা স্ট্যান্ড ও শৌচালয়। তার ফলে সাফাই কাজ করা যাচ্ছে না। নিকাশিনালা সাফাই-এর প্রয়োজনে ওই রিকশা স্ট্যান্ড ও শৌচালয় ভাঙতে হবে।’’