ঘরছাড়া: আকাশের মুখভার। তবু কাশের বনে ভেজা হাওয়ায় লেগেছে দোল। সকল কলুষ-মেঘ কেটে সবার আকাশে রোদ উঠুক। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
মহালয়া নিয়ে শাস্ত্র যে ব্যাখ্যাই করুক আমবাঙালির কাছে মহালয়া হল পরীক্ষা হলে খাতা নেওয়ার আগের ওয়ার্নিং বেল! হাতে আর গোনাগাঁথা দিন। তার মধ্যে শেষ করতে হবে উৎসবের প্রস্তুতি। মণ্ডপ থেকে প্রতিমা, বেড়াতে যাওয়ার ব্যাগ গোছানো থেকে পুজোর বাজার। একে হাতে সময় নেই তার মধ্যে নিম্নচাপের দাপটে কপাল চাপড়াচ্ছেন পুজো উদ্যোক্তারা। গোটা বর্ষাকাল ভর যে বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল সে কি না হামলে পড়ল পুজোর মুখে।
খারাপ আবহাওয়ার জেরে মুখ শুকিয়ে গিয়েছে মণ্ডপ শিল্পী অর্জুন ঘোষের। তিনি বলেন, “মহালয়া মানেই তো উদ্বোধনের দিন ঘনিয়ে এল। কী যে করব জানি না।”
প্রবল বৃষ্টিতে প্রতিমা ভাল করে শুকায়নি। চিন্তিত মৃৎশিল্পী কপালে ভাঁজ। পুজোকর্তা মানস সাহা বলেন, “অন্য বার মণ্ডপ নিয়ে সমস্যা হয় বলে সে দিকটা নিশ্চিত করলাম। কিন্তু তাতে বিপদ ঠেকাতে পারলাম কই। মহালয়ার পরের দিনগুলো যেন আঠারো ঘণ্টায় ফুরিয়ে যায়।”
সে কথা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন সুবীর এবং সাগরিকা দত্ত। চাকুরে দম্পতি ফি বছর পুজোয় বেরিয়ে পড়েন দূরে কোথাও। স্কুল শিক্ষিকা সাগরিকা বলেন, “যতই আগে থেকে প্রস্তুতি নিই না কেন, মহালয়া এলেই কেমন যেন সব তালগোল পাকিয়ে যায়। মনে হয় আর সময় নেই। সকালে স্কুল, সংসার ফলে গোছগাছের সময় ওই রাতের বেলা। কুল পাচ্ছি না যেন।’’
সব কিছু ঠিকমতো পারতেই হবে সুশান্তকুমার ভট্টাচার্যকে। মহালয়ার বিকেলে তিস্তা-তোর্সা এক্সপ্রেস ধরে পুজো করতে যাবেন উত্তরবঙ্গে। তার আগে স্থানীয় যজমানদের তর্পণ করাতেই হবে। সুশান্ত বলেন, “শনিবার ভোর থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত টানা গঙ্গার ঘাটে তর্পণ করিয়ে বাড়ি ফিরে নাকেমুখে গুঁজেই ছুটব ট্রেন ধরতে।’’