ধৃত: বহরমপুর আদালত চত্বরে সাহেবনগরে গুলির ঘটনায় ধৃত সনাতন মণ্ডল ও সালাউদ্দিন শেখ। তাঁদের পুলিশ হেফাজত হয়েছে। পাশে আব্দুল কালাম বিশ্বাস। তাঁর জেল হেফাজত হয়েছে। ছবি: ইন্দ্রাশিস বাগচী
জলঙ্গির গুলিকাণ্ডে বৃহস্পতিবার রাতেই দু’পক্ষের তিন জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তার মধ্যে নিহত সালাউদ্দিন শেখ ও আনারুল বিশ্বাসের পরিবারের করা অভিযোগে ধৃত সনাতন মণ্ডল ও সালাউদ্দিন শেখকে পুলিশ জামিনঅযোগ্য ধারা দিয়েছে। শুক্রবার তাদের ৩ দিনের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। গুলিতে আহত হন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তহিরুদ্দিন মণ্ডলের ভাই মন্টু শেখও। সেই ঘটনায় তহিরুদ্দিনের পরিবারের করা অভিযোগের ভিত্তিতে ধৃত আবুল কালাম বিশ্বাসকে ৭ দিনের জেল হেফাজত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই ঘটনার মূল অভিযুক্ত তৃণমূলের জলঙ্গি উত্তর জোনের ব্লক সভাপতি তহিরুদ্দিন মণ্ডল অধরা থাকায় ক্ষোভ বাড়ছে। সাহেবনগর নাগরিক মঞ্চের নেতাদের দাবি, এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তহিরুদ্দিন ও সাহেবনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী মিল্টনকে (সামিম আখতারুজ্জামান) পুলিশ কেন গ্রেফতার করছে না?
বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীও বলেন, ‘‘তৃণমূলের নেতা গুলি চালানোর পরে সংবাদমাধ্যমের কাছে বক্তব্য রাখতে পারে, অথচ পুলিশ তাদের দেখতে পায় না। তৃণমূলের দুষ্কৃতীকে পুলিশ ধরতে পারছে না।’’ জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র অশোক দাস বলছেন, ‘‘পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করতে বিরোধীরা এসব মন্তব্য করছে। পুলিশ তাদের মতো কাজ করছে। তদন্ত করে পুলিশ প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিশ্চয় নেবে।’’ তহিরুদ্দিনের বিরুদ্ধে কী দল ব্যবস্থা নেবে? তাঁর দাবি, ‘‘সাহেবনগরের ঘটনা রাজ্য নেতৃত্বের নজরে রয়েছে।’’
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার অজিত সিংহ যাদব শুক্রবার রাতে বলেন, ‘‘তহিরুদ্দিন-সহ বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতারের জন্য তল্লাশি চলছে।’’
বুধবার সকালে সাহেবনগরে নাগরিক মঞ্চ নয়া নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে বন্ধ ডাকে। সেখানে গোলমালে গুলি চলে। মারা যান দু’জন নিরীহ গ্রামবাসী। বৃহস্পতিবার সেই দুই পরিবার জলঙ্গি থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে সাহেবনগর খয়েরতলার তৃণমূল কর্মী সনাতন মণ্ডল এবং তৃণমূলের সাহেবনগর গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যর স্বামী সালাউদ্দিন শেখকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে খুন ও অস্ত্র আইনে মামলা করেছে।
আবুল কালাম বিশ্বাসের সঙ্গে আরও দু’জনকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে এসেছিল। আবুল কালামকে পরে গ্রেফতার করা হলেও বাকি দু’জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আদালত থেকে সংশোধনাগারে যাওয়ার পথে আবুল কালাম বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা আমাদের গুলি করে মারছে। আর পুলিশ ওদের ছেড়ে আমাদেরই ধরছে। এর সঠিক তদন্ত চাই।’’