কল্যাণীতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।
পুরভোটের প্রচারে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর প্রার্থী ছাড়া অন্য কারও ছবি দল অনুমোদন করে না বলে ফের সতর্ক করে দিলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। রবিবার কল্যাণীতে কর্মিসভায় এসেছিলেন তিনি। সেখানেই এই মন্তব্য করেন। পুরভোটের আগে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এড়াতেই পার্থবাবু এ বিষয়ে সতর্ক থাকার কথা মনে করিয়ে দিলেন বলে তৃণমূলেরই একটি অংশের মত।
এ দিন বিকালে বিদ্যাসাগর মঞ্চে জেলার ৮টি পুরসভার ১৩৩টি ওয়াডের প্রার্থী, জন-প্রতিনিধি এবং দলীয় নেতৃত্বকে নিয়ে সভা করেন পার্থবাবু। সাড়ে চারটে নাগাদ পৌঁছন ঘোষপাড়ায় দলীয় কার্যালয়ে। সেখানে জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত, স্থানীয় বিধায়ক রমেন্দ্রনাথ বিশ্বাসকে নিয়ে সাংবাদিক সন্মেলন করেন। পার্থবাবু বলেন, “দলেরই দু’একজন নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু, যাঁরা দলীয় প্রতীকে লড়ছেন, আপনারা শুধু তাঁদের পাশে দাঁড়ান। তাঁদেরকেই জেতান।” বিক্ষুব্ধ প্রার্থীদের বিরুদ্ধে পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি স্পষ্ট করে দেন।
প্রচারে গিয়ে মানুষের কাছে কী কী বলতে হবে, তা নিয়ে এ দিনের কর্মিসভায় আলোচনা হয়। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, “প্রচারে বের হয়ে মানুষের সমস্যাগুলো লিপিবদ্ধ করুন। পরে ভোটে জিতে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সেগুলোর বাস্তবায়নে জোর দিন।” রাজ্য সরকার যে যে উন্নয়নমূলক কাজ করেছে, পুরভোটের প্রচারে তা-ও মানুষের কাছে তুলে ধরার নির্দেশ দেন তিনি। নির্বাচনে খরচ কমানোর বিষয়েও সতর্ক থাকতে বলেন পার্থবাবু।
গরমের মধ্যেই পুরভোট হতে চলেছে। এই প্রসঙ্গটিও ওঠে এ দিনের বৈঠকে। তৃণমূল নেতৃত্ব চান, পুরসভা নির্বাচন সকাল সাতটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত হোক। গরমের দিনে তিনটে পর্যন্ত ভোট হলে অনেকেই ভোট দিতে পারবেন না! পার্থবাবুর কথায়, “আমরা চাই সব মানুষ তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করুন। কিন্তু, বিরোধীরা সেটা চান না।”
ইতিমধ্যেই নদিয়ার গয়েশপুরে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে রাজ্যের শাসকদল। বিরোধীদের অভিযোগ, তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছেন অনেকেই। সে প্রসঙ্গে পার্থবাবুর কটাক্ষ, “আমরা জিতলে বলা হয় সন্ত্রাস করেছি। হারলে বলা হয় জনপ্রিয়তা হ্রাস পাচ্ছে!” “বিরোধী দলের পাশে মানুষ নেই, অন্য কিছু নয় হারের ভয়েই তারা প্রার্থী তুলে নিয়েছে”, দাবি পার্থবাবুর।
গয়েশপুর পুরসভা দখলের ক্ষেত্রে মুকুল রায়ের কী ভূমিকা রয়েছে? একটু থমকে তিনি বলেন, “আপনারা সব জায়গার মুকুল রায়কে দেখতে পান কেন?” কর্মী-সমাবেশে গয়েশপুর পুরসভা দখল করার জন্য নেতা-কর্মীদের বাহবা দেন তিনি। পার্থবাবুর দাবি, রাজ্যে ২০৯৩টি ওয়ার্ডে ভোট হচ্ছে। তার শতকরা ৯০ ভাগ আসনে তৃণমূল জিতবে। বিজেপি-র নাম না করে এই তৃণমূল নেতার কটাক্ষ, “মানুষ ওদের পাশে নেই। ২০১৬ সালের পরে তাই তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না।”