Partha Chatterjee

Partha Chatterjee: টিকিটে-পদে পার্থেরই ছায়া?

প্রাক্তন পুরপ্রধান অসীম সাহাকে সরিয়ে নতুন পুর প্রশাসকমণ্ডলী তৈরি হলে চেয়ারম্যান করা হয় জয়ন্তের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ব্যবসায়ী নরেশ দাসকে।

Advertisement

সুস্মিত হালদার

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২২ ০৫:১৮
Share:

ফাইল চিত্র।

প্রার্থিতালিকা বদল তো ছিলই। কৃষ্ণনগরে পুরবোর্ড গঠনের সময়েও শেষ মুহূর্তে বদলে গিয়েছিল চিত্রনাট্য।

Advertisement

তৃণমূলের একাংশের দাবি, এর নেপথ্যে ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁরই হাতযশে ভোটের আগেই কার্যত কোণঠাসা হয়ে গিয়েছিলেন তৎকালীন উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি জয়ন্ত সাহা ও তাঁর লোকজন। ভোটের পর পদও হারান ইদানীং অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের শিবিরের লোক বলে পরিচিত জয়ন্ত।

এক সময়ে কিন্তু পার্থের সুনজরে পড়েই তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষা সেলের জেলা সভাপতি হয়েছিলেন জয়ন্ত। তাঁর ঘনিষ্ঠদের দাবি, করোনা কালে বেশ কয়েকটি কর্মসূচি নিয়ে তিনি পিকে-র টিমের সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরে পড়েন। তাঁকে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি করা হয়। গত বিধানসভা ভোটের পরে নদিয়ায় দলের সংগঠনকে উত্তর-দক্ষিণে ভেঙে জয়ন্তকে উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি করা হয়। সেই সঙ্গেই দলের কৃষ্ণনগর শহর সভাপতি করা হয় শিশির কর্মকারকে।

Advertisement

প্রাক্তন পুরপ্রধান অসীম সাহাকে সরিয়ে নতুন পুর প্রশাসকমণ্ডলী তৈরি হলে চেয়ারম্যান করা হয় জয়ন্তের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ব্যবসায়ী নরেশ দাসকে। পরে পুরভোটের টিকিট নিয়ে শিশির কর্মকারের সঙ্গে বিবাদ বাধে তাঁদের। শিশির আর তাঁর চিরশত্রু বলে পরিচিত অসীম সাহা একজোট হয়ে যান। দুই শিবিরই রাজ্যের কাছে নিজেদের প্রার্থিতালিকা পাঠায়। পরে তৃণমূলের ‘অফিশিয়াল পেজ’-এ যে তালিকা প্রকাশ পায় জয়ন্ত-নরেশের লোকজনই বেশি টিকিট পান। এর পর শহর নেতৃত্বের কাছে আর একটি তালিকা আসে যাতে দু’একটি বাদে শিশির-অসীমদের দেওয়া নামই ছিল। দলের মহাসচিব পার্থ জানান, দ্বিতীয় তালিকাই ঠিক। ভোটের পরে ফের জয়ন্ত-ঘনিষ্ঠ নরেশ দাসকে পিছনে ফেলে অসীম সাহার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রিতা দাস পুরপ্রধান হন। তার পরেই জয়ন্তের উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতির পদ চলে যায়। দলের একাংশের দাবি, এর পিছনেও ছিল সেই পার্থেরই হাত।

এখন দলের মধ্যেই প্রশ্ন উঠছে, এই সব নাটকীয় ঘটনাক্রমের নেপথ্যে আসলে কী? টাকার লেনদেন হয়েছিল কি না, হয়ে থাকলে কত, সেই প্রশ্নও ঘোরাফেরা করছে তৃণমূলের অন্দরে।

রাতারাতি পুরপ্রধান বনে যাওয়া রিতা দাস বলছেন, “আমি এক মিনিট আগেও জানতাম না যে দল আমায় এই দায়িত্ব দেবে। কোনও লেনদেনের প্রশ্নই নেই। আমার টাকা কোথায় যে দেব?” যিনি নিজে ফের পদাসীন হতে পারবেন না বুঝে রিতাকে সামনে এগিয়ে দিয়েছিলেন বলে তৃণমূলে কানাঘুষো চলে সেই প্রাক্তন পুরপ্রধান অসীম সাহার দাবি, “এমন কিছু আমার জানা নেই।”

অনেকেরই ধারণা ছিল, পুর প্রশাসক বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান নরেশ দাস দৌড়ে এগিয়ে আছেন। শেষ চালে তাঁর ঘুঁটি কেঁচে যায়। তাঁর সাবধানী মন্তব্য, “এ সব নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত। এ সব নিয়ে কোনও কথা বলব না।” প্রায়ই একই সুরে জয়ন্ত বলেন, “এই সিদ্ধান্তে জেলার কোনও ভূমিকা ছিল না। তাই এই বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement