গঙ্গা আরতি শান্তনু ঠাকুরের। নিজস্ব চিত্র
গঙ্গা আরতিকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিন ধরে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে কার্যত প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। একাধিক জায়গায় আরতিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। দুই রাজনৈতিক দলই পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার জন্য গঙ্গা আরতির কর্মসূচি নিচ্ছে বলে অনেকেই মনে করছেন।
রবিবার পৌষ সংক্রান্তির সন্ধ্যায় কল্যাণীর সরাটি পঞ্চায়েতের চরসরাটি এলাকায় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর গঙ্গা আরতি করেন। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় একাধিক বিজেপি নেতা ও সমর্থকেরা। এ দিনের গঙ্গাপুজোর কর্মসূচিতে হিন্দু ঐতিহ্য বিষয়টি তুলে ধরে পঞ্চায়েত ভোটে নিজেদের হিন্দু ভোটব্যাঙ্ক বিজেপি শক্ত করতে চাইছে বলে অনেকে মনে করছেন।
কল্যাণী ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন। এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোট নিজেদের দিকে টানার জন্য বিজেপি ও তৃণমূল দুই দলই ময়দানে নেমে পড়েছে। গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে জেলার দক্ষিণে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের সমর্থন বেশ ভাল পেয়েছিল বিজেপি। কল্যাণী ব্লকে সেই ধারাকে ধরে রাখতে এ দিনের গঙ্গা আরতি কর্মসূচি সহায়ক হবে বলেও অনেক বিজেপি নেতার ধারণা।
প্রসঙ্গত, এর আগে গঙ্গা আরতি নিয়ে হাওড়া ও বাবুঘাটে বিজেপির সঙ্গে সমস্যা বেঁধেছে শাসকদলের। রবিবার অনেক জায়গায় মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেতারা গঙ্গা আরতি করছেন শুনে এ দিন শান্তনু ঠাকুর বলেন, “বিজেপির নেতানাত্রী কর্মীরা যখন আরতি করতে চাইল, তখন পুলিশ গিয়ে বাধা দিল। পরবর্তীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নিলেন যে, ওঁরা করবেন। আমাদের বাধা দিয়ে দিয়ে পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে ওঁরা সেটা করছেন। সেটা ঠিক নয়। এটা রাজনৈতিক ভাবে অন্য আকার নেয়।”
তবে কল্যাণী বিধানসভা এলাকায় বিজেপির মধ্যে দু’টো ভাগ রয়েছে। এই দুই শিবিরের একে-অন্যের অনেক কর্মসূচিতে দেখা যায় না। প্রত্যাশিতভাবে এ দিনও বিধায়ক অম্বিকা রায়-সহ বেশ কিছু বিজেপি নেতাকে গঙ্গা আরতিতে দেখা যায়নি। কল্যাণী এলাকার স্থানীয় বিজেপি নেতারা আগেই মাঝেরচর এলাকায় গঙ্গা আরতি করেছেন।
যদিও কল্যাণী ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি পঙ্কজ সিংহ বলেন, “নির্বাচন এসেছে। এঁদের এখন দেখা যাবে। জেতার পর এলাকায় সাংসদকে দেখা যায়নি। এ দিনের কর্মসূচির কোনও প্রভাব কোথাও পড়বে না।”