প্রতীকী ছবি
কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের টাকা খরচের প্রশ্নে পুরনো নিয়ম ফিরছে। এক সময় ত্রিস্তর পঞ্চায়েত অর্থ কমিশনের টাকা খরচের সুযোগ পেত। কিন্তু চতুর্দশ অর্থ কমিশনে জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতিকে বাদ দিয়ে শুধুমাত্র গ্রাম পঞ্চায়েতকে টাকা বরাদ্দ করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তা নিয়ে দেশ জুড়ে পঞ্চায়েতের প্রথম দু’টি স্তর থেকে নানা প্রশ্নও তোলা হয়েছিল। সে সব প্রশ্ন খতিয়ে দেখার পরে সম্প্রতি পঞ্চদশ অর্থ কমিশনে পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরকে টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। যার জেরে মুখে হাসি ফুটেছে জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতির কর্তাদের। সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদ জেলার জন্য পঞ্চদশ অর্থ কমিশনে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। সেই টাকা শীঘ্রই জেলায় আসবে। মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) সুদীপ্ত পোড়েল বলেন, ‘‘পঞ্চদশ অর্থ কমিশনে জেলাপরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত এই তিনটি স্তরে টাকা বরাদ্দ হয়েছে। সেই টাকায় কাজের পরিকল্পনাও করা হচ্ছে।’’
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে চতু্র্দশ অর্থ কমিশন একশো শতাংশ টাকা গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে বরাদ্দ করেছিল। যার ফলে ওই প্রকল্পের টাকায় গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় নানা প্রকল্প হয়েছে। কিন্তু সেচ খাল, রাস্তার মতো বড় বড় প্রকল্প এক একাধিক পঞ্চায়েত কিংবা একাধিক ব্লকের উপর দিয়ে যায়। ফলে পঞ্চায়েতগুলি একাধিক পঞ্চায়েত বা ব্লক এলাকায় কাজ করতে পারত না। আবার জেলা পরিষদ বা পঞ্চায়েত সমিতি স্তরেও টাকা বরাদ্দ না হওয়ায় তাঁরা এই ধরনে বড় প্রকল্পে হাত দিতে গিয়ে অর্থকষ্টে পড়ত। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ মতো গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের ৭০ শতাংশ এবং জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতি ১৫ শতাংশ করে টাকা পাবে। জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, বরাদ্দের ৫০ শতাংশ স্বাস্থ্য বিধান, উন্মুক্ত শৌচবিহীন এলাকা, পানীয় জল, বৃষ্টির জল ধরে রাখা মতো একাধিক উন্নয়মূলক কাজ করা যেতে পারে। বাকি ৫০শতাংশ স্থানীয় চাহিদা ও প্রয়োজন অনুযায়ী স্থানীয় পরিকাঠামো গড়তে পারেন।
মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন মণ্ডল বলেন, ‘‘পুরনো নিয়মে কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনে টাকা বরাদ্দের জন্য আমরা নানাভাবে কেন্দ্রের কাছে দাবি জানিয়েছিলাম। পুরনো নিয়মে অর্থ বরাদ্দ হওয়ায় কাজে গতি আসবে। তিনটি স্তর উন্নয়নমূলক কাজ করার সুযোগ পাবে।’’ বুধবার লালগোলা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গির মিঞা বলেন, ‘‘অনেক প্রকল্প রয়েছে যেগুলি একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতের উপর হয়। কিন্তু শুধুমাত্র পঞ্চায়েতের জন্য টাকা বরাদ্দ হওয়ায় বড় প্রকল্প করতে গিয়ে সমস্যা হত। এ বারে পঞ্চায়েত সমিতির জন্য টাকা বরাদ্দ হওয়ায় আমরা সহজেই ওই ধরনের প্রকল্প করতে পারব।’’