যার আউটডোরে রোগী দেখার কথা তিনি ছুটিতে। তাই শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের সার্জারির আউটডোর বন্ধ থাকল শুক্রবার। তার পরিবর্তে অন্য কোনও চিকিৎসক আসলেন না। এমনকি দূর-দূরান্ত খেকে আউটডোরে আসা অসুস্থ মানুষকে ডাক্তার না-থাকার কথা জানানোরও কোনও ব্যবস্থা করলেন না জন্য জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অপেক্ষা করেও চিকিৎসকের দেখা না-পেয়ে এক সময় উত্তেজিত হয়ে ওঠেন তাঁরা।
অভিযোগ, এর আগেও একাধিক বার বিভিন্ন বিভাগে এমন ঘটনার সাক্ষী থাকতে হয়েছে রোগীদের। গত সপ্তাহের শুক্রবারই একই ঘটনা ঘটে। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ছুটিতে থাকায় সে দিনও বন্ধ ছিল সার্জারি বিভাগের আউটডোর। পর-পর দুই সপ্তাহে একই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন রোগীরা।
তাঁদেরই এক জন চাপড়ার সীমান্তবর্তী গ্রাম রানাবন্ধ থেকে আসা বছর ষাটের সরিরুল শেখ বলছেন, “পেটে ক’দিন ধরে অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে। গ্রামের ডাক্তারবাবু বলেছেন, অপারেশন করতে হবে। দু’ সপ্তাহ পর পর জেলা হাসপাতালে এসে ফিরে যেতে হল। এতে শুধু শারীরিক কষ্টই হয় না, যাতায়াতে অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। চিকিৎসক ছুটি নিতেই পারেন। কিন্তু তাঁর পরিবর্তে কেন অন্য চিকিৎসক দেখবেন না?হাসপাতালের কোনও দায়িত্ব নেই?’’
প্রতি শুক্রবার ওই হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের আউটডোরে রোগী দেখার কথা চিকিৎসর শুভঙ্কর সরকারের। গত সপ্তাহের শুক্রবার তাঁর এক নিকটাত্মীয় মারা গিয়েছিলেন বলে তিনি ছুটি নিয়ে চলে যান। ফলে সেই শুক্রবার সার্জারি বিভাগের আউটডোর বন্ধ থাকে। এ সপ্তাহের শুক্রবারও তিনি না-আসায় আউটডোর একই ভাবে বন্ধ থাকল। ফোনে শুভঙ্করবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমার পারিবারিক বিপর্যয়ের কারণে ছুটিতে আছি। আমার ডিউটি যাতে অন্য কেউ সামলে দেন তার জন্য আমি বিভাগীয় প্রধান অনির্বাণ জানাকে জানিয়ে এসেছিলাম। তার পর কি হয়েছে আমার সেটা জানা নেই।”
অনির্বাণবাবু বলছেন, “সার্জিকাল বিভাগে এক জন চিকিৎসকের রোগী অন্য চিকিৎসকের পক্ষে দেখা কঠিন। তাই এ দিন অন্য কোনও বিকল্প ডাক্তারকে আউটডোরে পাঠানো হয়নি।” অনির্বাণবাবুর আরও উক্তি, “আমি এ দিন আউটডোরের বেশ কিছু রোগীকে জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন থিয়েটারে বসে দেখে দিয়েছি।” কিন্তু বাকিদের কী হয়েছে? তাঁদের কেউ দেখলেন না কেন? এর কোনও সদুত্তর দিতে পারেন নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের সুপার সোমনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।” নিজস্ব চিত্র