বন্ধ রইল বহির্বিভাগ। শান্তিপুর স্টেট জেনারেল-এ। নিজস্ব চিত্র
তিনি শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের একমাত্র অস্থি বিশেষজ্ঞ। প্রতি বুধবার তিনি সেখানে বহির্বিভাগে রোগী দেখেন। কিন্তু শক্তিনগর হাসপাতালে আচমকা দুই অস্থি চিকিৎসক ইস্তফা দেওয়ায় তাঁকে সেখানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তাতে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন শান্তিপুরের রোগীরা। তাঁদের সমস্যা ও ক্ষোভ আঁচ করে দ্রুত শক্তিনগরে বিকল্প চিকিৎসক এনে চিকিৎসক সুমন্ত মণ্ডলকে শান্তিপুরে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু তাতেও বুধবার রোগীদের হেনস্থা রোখা গেল না। কারণ, বহির্বিভাগে অনুপস্থিত থাকলেন সুমন্তবাবু। দূরদূরান্ত থেকে এসে ফিরে যেতে হল বহু রোগীকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সুমন্তবাবু জানিয়েছেন, পড়ে গিয়ে পায়ে আঘাত লাগায় তিনি আসতে পারেননি, তবে দ্রুত কাজে যোগ দেবেন।
এ দিন গবারচর এলাকা থেকে হাসপাতালে এসেছিলেন অসিত মণ্ডল। বলেন, “হাটুতে সমস্যা। হাঁটাচলা করতে পারি না ঠিকমতো। খুব কষ্ট করে এসেছিলাম। কিন্তু এসে দেখি ডাক্তারবাবু আসেননি।” গোবিন্দপুর এলাকার নমিতা হালদার বলেন, “কোমরে ব্যাথা। কিন্তু ডাক্তার দেখাতে পারলাম না।’’ সুমন্তবাবুর কথায়, “হঠাৎ পড়ে গিয়ে পায়ে লেগেছে। তাই শান্তিপুর হাসপাতালে যেতে পারিনি। তবে আমি ওখানে যাব।”
এর পাশাপাশি হাসপাতালে শিশুরোগ বিভাগে ছোট শিশুদের নিয়ে আসা অভিভাবকেরাও সমস্যায় পড়েছেন। কারণ, গত সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত হাসপাতালের শিশু-বহির্বিভাগ বন্ধ। সামনে ঝুলছে নোটিস। সেখানে লেখা— ‘ডাক্তারবাবু ছুটিতে থাকায় তিন দিন শিশু বহির্বিভাগ বন্ধ থাকবে।’
হাসপাতালে দু’জন শিশু চিকিৎসক। তাঁরা এক-এক জন সপ্তাহে তিন দিন করে ডিউটি করেন বহির্বিভাগে। এক জন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁরই বুধবার আউটডোর ছিল। প্রশ্ন উঠেছে, অন্য জনকে কেন জরুরি ভিত্তিতে ডেকে আনা হল না? শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের সুপার জয়ন্ত বিশ্বাস বলেন, “এক জন শিশু চিকিৎসক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অন্য জনেরও বয়স হয়েছে, সামনেই তাঁর অবসর। তাঁরও শরীর ভাল নেই, তাই আনা যায়নি। তবে আশা করছি বৃহস্পতিবার থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।” স্ত্রীরোগ বিভাগে প্রসবের সময় স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পাশাপাশি এক জন শিশু বিশেষজ্ঞেরও থাকা উচিত। তা হলে এ দিন প্রসব কী করে হল? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেন, এ দিন হাসপাতালে কোনও প্রসব হয়নি!