প্রতীকী ছবি
দিন কয়েক আগে দুর্গাপুজোর উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে অতিমারির কালে মণ্ডপ তৈরি থেকে পুজো কেমন হবে তার গাইড লাইন দিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। সেই গাইড লাইন পুজো কমিটিগুলিকে আর একবার স্মরণ করিয়ে দিতে রবিবার বিকেলে জেলা পুলিশের আধিকারিকরা পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে। যদিও তার আগে সরকারী নির্দেশ মেনে মন্ডপ তৈরীর পরিকল্পনা থেকে পুজোর ক’টা দিন কিভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুজো করা যায় তার খসড়াও তৈরি করে ফেলেছিলেন একাংশ পুজো কমিটি। বহরমপুর তথা জেলার বেশ কিছু বড় পুজো কমিটি তাদের বাজেট কাটছাঁট করে করোনার আবহে দুর্গাপুজো করতে উদ্যোগী হয়েছেন।
আয়েশবাগ দুর্গাপুজো কমিটির পুজো বেশ কয়েকবছর ধরে জেলার মানুষের কাছে দর্শনীয় হয়ে উঠেছিল। অন্য বছরগুলোতে বাজেট কোটির আশেপাশে ঘুরলেও এ বার সেই পুজোর বাজেট পাঁচ লাখে এসে দাঁড়িয়েছে বলে জানান পুজো কমিটির সম্পাদক রতনকান্তি পাল। তিনি বলেন, “মণ্ডপে প্রবেশ না করেও মানুষ বাইরে থেকে যাতে প্রতিমা দর্শন করতে পারেন সেই জন্য চারপাশ খোলা মণ্ডপ তৈরি হবে। মূল মন্দিরে দুর্গা প্রতিমা থাকবে। যে পথ দিয়ে দর্শনার্থীরা প্রতিমা দর্শন করবেন সেই পথেই স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থা থাকবে।” ভিড় এড়াতে থাকছে না বিশেষ পাশের সুবিধাও। শারীরিক দূরত্ব বিধি মেনে মণ্ডপে ঢোকা ও বেরনোর পথ আলাদাই থাকছে বলে ওই কমিটি সূত্রে জানা যায়।
মধুপুর এলাকায় বাবুলবোনা রোডের ওপর বিভিন্ন থিমের আরও একটি বড় পুজো হয়। এ বছরও থিম পুজো হচ্ছে। খোলামেলা পরিবেশ বজায় রাখতে সেখানে নাথ মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে বলে জানান পুজো কমিটির সম্পাদক মিঠু জৈন। তিনি বলেন, “যাঁরা অঞ্জলি দিতে আসবেন তাদের জন্য মন্ডপের ভিতরে জায়গা বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।” মিঠু বলেন, “নিরঞ্জনেও সমারোহ হবে না।’’ নেতাজি রোডের বিএড কলেজ লাগোয়া ভট্টাচার্য পাড়ার দুর্গাপুজোতেও বেশ ভিড় হয় মানুষজনের। ওই পুজো কমিটির সম্পাদক সুজয় সরকার বলেন, “আমাদের থিম ‘সচেতনতায় আলোর দিশা’।” উদ্যোক্তারা জানালেন, বাঁশের মণ্ডপে মাটির সামগ্রী ব্যবহার করা হবে মণ্ডপ সজ্জায় আর মণ্ডপ জুড়ে থাকবে বাহারি আলোকসজ্জা। শুধু বৃষ্টির হাত থেকে রেহাই পেতে প্রতিমার মাথার উপরে ছাদ থাকবে ওই মণ্ডপে। মাস্ক ছাড়া মণ্ডপে প্রবেশ নিষিদ্ধ বলেই জানালেন উদ্যোক্তারা। তাঁদেরই একজন বলেন, “অঞ্জলি দিতে বাড়ি থেকে ফুল বেলপাতা নিয়ে আসতে হবে। পুজোতে কাটা ফল নেওয়া হবে না। থাকবে ভোগ বিতরণের জন্য যে কন্টেনার দেওয়া হবে তাও স্যানিটাইজ করে দেওয়া হবে।” স্বর্ণময়ীর অভ্যুদয় সংঘের বাজেট কমিয়ে ছ’লাখের পুজো হবে, তিন দিক খোলা মণ্ডপ তৈরি হবে বলে জানালেন সম্পাদক অভিজিৎ মিশ্র। মণ্ডপে দর্শনার্থীদের জন্য মাস্ক ও স্যানিটাইজার বরাদ্দ থাকবে।
তবে এ সবের পাশাপাশি বেশ কিছু ছোট পুজোও হচ্ছে শহরে। ঘিঞ্জি এলাকায় পুজো করা যাবে না বলে স্থান পরিবর্তনের কথা ভাবা হচ্ছে।