সাইকেল চালিয়ে এলাকার বাজার, অলিগলি ঘুরলেন, রানাঘাট-১ এর বিডিও।
দিন কয়েক আগে জেলা প্রশাসনিক বৈঠক থেকে বিডিও ও অন্য জনপ্রতিনিধিদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরামর্শ দিয়েছিলেন, “সাইকেল নিয়ে এলাকায় ঘুরুন। মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। সমস্যা বোঝার চেষ্টা করুন।” তার পরই শনিবার সকালে রানাঘাট-১ এর বিডিও সাইকেল চালিয়ে এলাকার বাজার, অলিগলি ঘুরলেন।
এতেই সরব হয়েছেন বিরোধীরা। শাসক ও বিরোধী দলের মধ্যে মন্তব্যের লড়াইও চলছে। প্রশাসনিক কর্মীদের তৃণমূল কার্যত দলদাসে পরিণত করছে এবং পঞ্চায়েত ভোটের আগে তাঁদের দলীয় কর্মীদের মতো ব্যবহার করছে বলে বিজেপি দাবি তুলেছে। যথারীতি তা খণ্ডন করেছে তৃণমূল। যদিও বিডিও সঞ্জীব সরকার নিজে দাবি করেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়ার পর সাইকেল নিয়ে বেরিয়েছি, এমনটা নয়। এর আগেও এ ভাবেই সকালের দিকে আমি সাইকেল নিয়ে এলাকায় যাতায়াত করি।’’
শনিবার সকাল ঘড়িতে তখন সাড়ে আটটা। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে রানাঘাট-১ বিডিও অফিস থেকে বিডিও সঞ্জীব সরকারকে সাইকেল নিয়ে বের হতে দেখা যায়। জাতীয় সড়ক পার করে হবিবপুর ইসকন মন্দিরের সামনে দিয়ে পুরাতন বাজারের রাস্তা ধরেন তিনি। যদিও তাঁর সঙ্গে দফতরের অন্য কোনও কর্মীকে দেখা যায়নি। হবিবপুর পুরাতন বাজারের কয়েক জন মাছ বিক্রেতার সঙ্গেও তাঁকে কথা বলতে দেখা গিয়েছে। তবে তাঁকে কেউ চিনতে পারেননি। হবিবপুর পঞ্চায়েত অফিস-সংলগ্ন কয়েকটি বাড়িতে ঢুকতে দেখা গিয়েছে বিডিওকে। সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা বাসিন্দারা পাচ্ছেন কিনা, সে বিষয়ে তিনি খোঁজখবর নেন।
রানাঘাটের সাংসদ তথা বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি জগন্নাথ সরকার বলেন, ‘‘সরকারি আধিকারিকদের দলীয় কর্মীতে পরিণত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মানুষের সঙ্গে সংযোগ যে কোনও উপায়ে রাখা যেতে পারে। তার জন্য সাইকেলের প্রয়োজন হয় না। আসলে সরকারি প্রকল্পে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি সামনে আসছে। দৃষ্টিভঙ্গি ঘোরাতেই মুখ্যমন্ত্রী এই নিদান দিয়েছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে মানুষ এর জবাব দেবে।’’ তৃণমূলের নদিয়া জেলা পরিষদের সহ-সভাপতি দীপক বসু এর পাল্টা বলেন, ‘‘বিজেপি-র সাংসদকে তো নিজের দলের কর্মীরাই অনুষ্ঠানে বয়কট করেছেন বলে শুনেছি। জনসংযোগের ব্যাপারে ওঁরা কতটুকুই বা বুঝবেন। আসলে মানুষের জন্য ওঁরা কাজ করতে পারছেন না। ওঁদের হিংসা হচ্ছে বলে এক জন সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধাচরণ করছেন।’’ নিজস্ব চিত্র