সুতির একটি গ্রাম। — ফাইল চিত্র।
জোট বেঁধে সুতিতে দুটি পঞ্চায়েতের দখল নিল বিরোধীরা। সাদিকপুর পঞ্চায়েতে প্রধান হলেন আরএসপির রেশমা খাতুন। যদিও নির্বাচিত হওয়ার পরেই তিনি এ দিনই কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন বলে দাবি। আর হারোয়া পঞ্চায়েতে প্রধান হন কংগ্রেসের রাখী রবিদাস। দুটি পঞ্চায়েতেই উপ-প্রধান পদ পেয়েছে বিজেপি। এর আগে দুটি পঞ্চায়েতই ছিল তৃণমূলের দখলে।
জানা গিয়েছে, শাসক দল ও পুলিশের নাগাল এড়াতে এই দুই পঞ্চায়েতের বিরোধী পঞ্চায়েত সদস্যরা রাজ্যের বাইরে ঝাড়খণ্ডে গিয়ে শিবির করে ছিলেন প্রায় এক মাস। এর মধ্যে ওই বিরোধী সদস্যদের না পেয়ে তাঁদের বাড়িতে বোমা পড়েছে। পাশাপাশি শাসানি ও হুমকি বাদ যায় নি বলে অভিযোগ।
শুক্রবার বোর্ড গড়ার দিন শাসক দলের হাতে আক্রান্ত হতে পারেন এমন আশঙ্কায় তৃণমূল বিরোধী সব দলের সমর্থকরা ব্যাপক সংখ্যায় হাজির ছিলেন দুই পঞ্চায়েত ভবনকে ঘিরে। তৃণমূল সমর্থকেরা থাকলেও বোর্ড পাওয়ার আশা নেই দেখে মাঝপথেই এলাকা ছাড়ে তারা।
হারোয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে ২৬ জন সদস্যের মধ্যে ১২ জন সদস্য ছিল তৃণমূলের। বিরোধীরা জোট বাঁধেন কংগ্রেসের ৮, সিপিএমের ৩, বিজেপির ২ ও আরএসপির ১ জন। এই পঞ্চায়েতে প্রধান পদটি তফসিলি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ছিল। তৃণমূলের একজনও সে প্রার্থী ছিলেন না। তবে এ দিন ভোটাভুটির আগে তৃণমূল প্রধান পদে কংগ্রেসের এক তফসিলি মহিলা সদস্য চন্দনা মণ্ডলের নাম প্রস্তাব করে।
দাবি, প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন চন্দনা। চন্দনা তৃণমূলের বিদায়ী প্রধান ছিলেন। এ বারে তাকে দল মনোনয়ন না দেওয়ায় কংগ্রেস থেকে দাঁড়িয়ে জিতেছেন। চন্দনা অস্বীকার করায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রধান হন কংগ্রেসের রাখী রবিদাস। বিনা ভোটেই বিজেপির জবারানী মণ্ডল উপ-প্রধান হন।
সাদিকপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে সদস্য ছিলেন ২৭ জন। তৃণমূলের ১০ জনের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের ৬, বিজেপির ৮ ও বামেদের ৩ জন জোট বাঁধেন। এরই মধ্যে কংগ্রেস সদস্য জুয়েল শেখ যোগ দেন তৃণমূলে। তবুও এদিন প্রধান পদে বিরোধী দলের প্রার্থী আরএসপির রেশমা খাতুন জয়ী হন। উপ-প্রধান হন বিজেপির আশিস দাস।
কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি তারিকুল আলম বলেন, “এই জোট দুর্নীতির বিরুদ্ধে। দুটি পঞ্চায়েতে রাজনীতি নয়, গ্রামের উন্নয়নই একমাত্র লক্ষ্য।” যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, “বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেস ও সিপিএমের এই জোট প্রমাণ করছে সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে তারা।”