গয়না পরানো হচ্ছে প্রতিমাকে। নিজস্ব চিত্র।
দীপান্বিতা অমাবস্যার অন্ধকারেও চারিদিক আলোয় আলোকিত। হাজারো জনসমাগম। পুজোর জন্য সমাগত ভক্তদের মনে ভয় ও শ্রদ্ধার মিশ্র অনুভূতি। ভক্তদের অটল বিশ্বাস, রাতের নিকষ অন্ধকার কেটে যাবে দেবীর অভয় হাতের স্পর্শে। ভট্টাচার্য বাড়ির কালীপুজোকে ঘিরে জড়িয়ে বহু বিশ্বাস, জনশ্রুতি।
ভট্টাচার্য বাড়ির সদস্যেরা জানান, একাদশীর দিন কাঠামোয় মাটির প্রলেপ পড়ে। তার পরেই দীপান্বিতা অমাবস্যায় ‘বুড়োমা’র পুজো শুরু হয়। প্রতিমা আনুমানিক আট ফুট লম্বা। গাত্র বর্ণ গাঢ় কালো। ভ্রু টকটকে লাল।
পরিবারের বর্তমান সদস্য মহেশ্বরপ্রসাদ ভট্টাচার্য জানান, সপ্তদশ শতকের শেষভাগে বর্তমান বাংলাদেশের রাজসাহি জেলার নাটোর মহকুমার মাঝগ্রামের বাসিন্দা দেবীদাস ভট্টাচার্য ছিলেন সাধক প্রকৃতির গরিব ব্রাহ্মণ। তাঁর খুব ইচ্ছে ছিল গঙ্গার তীরে বাস করার। তাই তিনি পৈতৃক বাসস্থান ছেড়ে কালীগঞ্জের জুরানপুর গ্রামের নিকট শ্রীরামপুরে এসেছিলেন। দেবীদাস ভট্টাচার্যকে নাটোরের রানি ভবানী বসবাস করার জন্য জমি দান করেন। দেবীদাসের সঙ্গে থাকতেন তার সহধর্মিণী ও বড় পুত্র নৃসিংহ। নৃসিংহ জন্মের প্রায় ১২ বছর পরে ওই পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন দেবীদাসের কনিষ্ঠপুত্র রাজারাম সিদ্ধান্ত। রাজারাম সিদ্ধান্ত কালীগঞ্জের জুরানপুরের শ্রীরামপুরে বটগাছের নীচে মাতৃসাধনায় রত হন। কথিত, তিনি সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। তার কয়েক বছর পরে নৃসিংহের পুত্র দীননাথ তর্কালঙ্কার প্রথম আদ্যাশক্তির পূজা প্রচলন করেন। দীননাথ তর্কালঙ্কার দেবীর দর্শন পাওয়ার জন্য দীর্ঘ দিন কঠোর সাধনা করেন। কথিত, এক দিন দীননাথ নিদ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় দেবীর দর্শন পান ও পুজোর আদেশ পান। জানা গিয়েছে, পরিবারের পুরুষ সদস্যেরা সারারাত পুজোয় পৌরোহিত্য করেন। ওই পরিবারের শুধুমাত্র বাড়ির মহিলা সদস্যেরা দেবীর ভোগ রান্না করেন।