প্রতীকী ছবি
প্রশাসনিক সুবিধার্থে এ বছর গোড়ার দিকে মুর্শিদাবাদে দু’টি পুলিশ জেলা হয়েছে। জলঙ্গি থানার একাংশকে নিয়ে তৈরি হয়েছে জলঙ্গি থানা। এ বার বহরমপুর থানাকে ভেঙে তিনটি থানা করার প্রস্তাব দিল জেলা পুলিশ। সম্প্রতি মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরে এ বিষয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবিত থানা তিনটি হল বহরমপুর, কর্ণসুবর্ণ ও রাজধরপাড়া। মুর্শিদাবাদের পুলিশ কে শবরী রাজকুমার বলেন, ‘‘বহরমপুর থানাকে ভেঙে তিনটি থানা করার প্রস্তাব রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়েছি। তিনটি থানা হলে এলাকার মানুষের যেমন সুবিধা হবে, তেমনই প্রশাসনিক কাজকর্মে সুবিধাও হবে।’’
জেলা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একটা সময় গোটা বহরমপুর ব্লক ও বহরমপুর পুরসভাকে নিয়ে ছিল বহরমপুর থানা। কিন্তু এত বড় এলাকা সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হত পুলিশকে। এমনকি থানা থেকে এলাকা অনেক দূরে হওয়ায়, বিভিন্ন ঘটনার অনেক পরে পুলিশের পা পড়ত। আর সে কথা মাথায় রেখে ১৯৯২ সালে বহরমপুর থানা ভেঙে বহরমপুর ব্লকের চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতকে নিয়ে তৈরি হয়েছে দৌলতাবাদ থানা। তবে সাবেক বহরমপুর থানা এলাকায় ব্লকের বাকি ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও বহরমপুর পুরসভা থেকে গিয়েছে।
বহরমপুর থানার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের দূরত্ব প্রায় ৫০কিলোমিটার। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জনসংখ্যা যেমন বেড়েছে, তেমনই অপরাধের ধরন বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে বহরমপুর থানাকে ভেঙে তিনটি থানা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। থানা বাড়লে পুলিশকর্মীর সংখ্যা বাড়বে। সামগ্রিক ভাবেই প্রশাসনিক তৎপরতা বাড়বে। তাতে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সুবিধা হবে। এ বছরের গোড়ায় মুর্শিদাবাদ দু’টি জেলা পুলিশে ভাঙা হয়। একটি মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলা, অপরটি জঙ্গিপুর পুলিশ জেলা। মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলায় ২৪টি থানা রয়েছে, জঙ্গিপুর পুলিশ জেলায় ৬টি থানা রয়েছে।
জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, প্রস্তাবিত বহরমপুর থানায় বহরমপুর শহরের পাশাপাশি মণীন্দ্রনগর, হরিদাসমাটি, নিয়াল্লিশাড়া-গোয়ালজান ও রাধারঘাট-১ গ্রাম পঞ্চায়েতকে রাখার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবিত রাজধরপাড়া থানায় ভাকুড়ি-১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত, রাজধরপাড়া, নওদাপানুর ও হাতিনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাকে রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত কর্ণসুবর্ণ থানা এলাকায় রাঙামাটি-চাঁদপাড়া, সাটুই-চৌরিগাছা, সাহাজাদপুর ও রাধারঘাট-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাকে রাখার কথা বলা হয়েছে।
কর্ণসবর্ণের আরোয়া গ্রামের বাসিন্দা নিধু দাস বলেন, ‘‘এমনিতেই যানজটের কারণে ভাগীরথী সেতু পেরিয়ে বহরমপুর যাতয়াত করা খুব সমস্যার। ফলে ঘটনা ঘটার অনেক পরে এলাকায় পুলিশ পৌঁছয়। এলাকায় একটি থানা হলে আমাদের উপকার হবে।’’
সলুয়াডাঙার বাসিন্দা মহম্মদ হিলালউদ্দিন বলেন, ‘‘রেলগেট ও যানজট কাটিয়ে পুলিশের এলাকায় পৌঁছতে অনেক দেরি হয়ে যায়। তাই রাজধরপাড়ায় নতুন থানা হলে ভাল হবে।’’