—নিজস্ব চিত্র।
গোপন সূত্রে আগেই খবর পেয়ে গিয়েছিল পুলিশ। সেই ফাঁদ পাতা হয়। আশপাশেই ঘাপটি মেরে ছিলেন পুলিশকর্মীরা। দূর থেকে পিকআপ ভ্যানটি আসতে দেখেই সতর্ক হয়ে যান সকলে। ইতিমধ্যেই গাড়ির নম্বর মিলিয়ে নেওয়া হয়েছে। সেটি কাছে আসতেই ঘিরে ধরলেন পুলিশকর্মীরা। তার পরেই শুরু হল চিরুনি তল্লাশি। কিন্তু কিছুই পাওয়া গেল না। হঠাৎই গাড়িতে রাখা একটি পাটাতনে চোখ আটকে যায় এক পুলিশকর্তার। তৎক্ষণাৎ বুদ্ধিও খেলে গেল তাঁর মাথায়। পুলিশকর্তার নির্দেশে গাড়িতে থাকা একটি পাটাতন ভাঙা হতেই মিলল সেই গোপন কুঠুরির সন্ধান। বাঙ্কারে রাখা গুচ্ছ গুচ্ছ প্লাস্টিকের প্যাকেট। সেগুলি খুলতেই মিলল গাঁজা!
সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ আমতলা-বহরমপুর রাজ্য সড়কের চোঁয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল গাঁজা উদ্ধার করল মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থানার পুলিশ। পাচারচক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে গাড়িচালককে। ধৃতের নাম শেখর ঘোষ। তিনি মুর্শিদাবাদেরই বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, ওড়িশা থেকে নদিয়া নবদ্বীপে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল ওই গাঁজা। নদিয়ার এক কারবারির কাছে তা পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল।
ধৃতকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিতেই গাঁজা পাচারের জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি করা হয়েছে গাড়িটি। গাড়িতে রাখা একটি পাটাতনের নীচে বাঙ্কার তৈরি করা হয়েছে গাঁজা রাখার জন্য। সেখান থেকেই ১২০ কোজি গাঁজা মিলেছে। তদন্তকারীদের অনুমান, মণিপুরী গাঁজার জোগানে ঘাটতি পড়তেই চাহিদা বাড়ছে ওড়িশার গাঁজার। কেজি পিছু ৫২ হাজার টাকা দরে এই গাঁজা হাত বদল হচ্ছিল বলে জানা গিয়েছে। তবে এত বিপুল পরিমাণ গাঁজা নদিয়ার কোনও এক নির্দিষ্ট ব্যক্তিকেই পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল না কি একাধিক ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল, তার উত্তর খোঁজা হচ্ছে।
মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদব বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট সূত্রের খবরের ভিত্তিতে তল্লাশি চালিয়ে একটি পিকআপ ভ্যানে প্রায় ১২০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে ও এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিস্তারিত তথ্য উদ্ধারের চেষ্টা হচ্ছে।’’