গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
নিয়ম করে সকাল ৯টা ২০-র ট্রেন ধরা। আবার ফিরে আসা রাত ৮টা ৪০-এর ট্রেনে। কোনও সরকারি বা বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন না যুবক। নিজের কোনও ব্যবসাও ছিল না। ওই যুবক ভগবানগোলা থেকে প্রত্যেক দিন বেলডাঙা যেতেন চুরি করতে! কাজ মিটে গেলে আবার বাড়ি ফিরে আসতেন। একটি বাইক চুরির তদন্তে নেমে এ কথা জানতে পেরে স্তম্ভিত হয়ে গেলেন মুর্শিদাবাদের পুলিশকর্তারা।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা স্টেশন সংলগ্ন বাজারে বাইক চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন স্বপন শেখ নামে এক ব্যক্তি। স্থানীয়েরাই তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। জেরার মুখে বাইক চুরির কথা স্বীকার করেছেন ওই যুবক। তাঁর বলে দেওয়া জায়গা থেকে উদ্ধার হয়েছে ১১টি বাইকও। ১২ নম্বর বাইকটি চুরি করতে গিয়েই ধরা পড়ে গিয়েছেন যুবক। মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদব বলেন, ‘‘চুরির অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর কাছ থেকে বাইক উদ্ধার হয়েছে। তদন্ত চলছে।’’ এই কারবারে আর যাঁরা জড়িত, তাঁদের খোঁজেও তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে খবর পুলিশ সূত্রে।
তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, জেরায় স্বপন স্বীকার করেছেন, অনেক দিন ধরেই এ কাজ করছেন তিনি। নিত্যযাত্রীর মতো ভগবানগোলা থেকে বেলডাঙা যেতেন। সেখান স্টেশন চত্বরে রাখা বাইক চুরি করতেন। তার পর অন্য এক ব্যক্তির সাহায্য নিয়ে সেটিকে এক পরিচিতের গ্যারেজে পৌঁছে দিতেন। শুক্রবার স্বপনকে আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। উদ্ধার হওয়া বাইকগুলিকে মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দিতে উদ্যোগা হয়েছে বেলডাঙা থানা।
খোয়া যাওয়া বাইক ফিরে পেয়েছেন তাহিকুল হক নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘‘এই ভাবে যে কেউ চুরি করতে পারে, সেটা আগে ভাবিনি। চুরির জন্য নিত্যযাত্রা! এ তো সিনেমার চিত্রনাট্যকেও হার মানাবে।’’