প্রতীকী ছবি
কালীপুজোর চাঁদার দাবিতে তৃণমূলের ব্লক সভাপতির দাদাকে মারধরের অভিযোগ উঠল দলেরই এক যুব নেতা ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় শুভঙ্কর মুখোপাধ্যায় নামে ওই যুব নেতা এবং তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে শান্তিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শান্তিপুর থানার ফুলিয়া কলোনির বাসিন্দা শুভঙ্কর ওরফে পিটার নামে ওই যুব তৃণমূল নেতা ফুলিয়া কলোনির একটি কালীপুজোর সঙ্গে যুক্ত। তাঁর স্ত্রী জেলা পরিষদের ক্ষুদ্র শিল্প ও বিদ্যুৎ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ জানান, বুধবার নবলা পঞ্চায়েতের প্রফুল্লনগর এলাকায় শুভঙ্করের কয়েকজন সঙ্গী যান পুজোর চাঁদা আদায় করতে। সেখানেই ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তপন সরকারের দাদা সুনীল সরকারের কাছে তাঁরা বড় অঙ্কের টাকা চাঁদা হিসাবে দাবি করেন বলে অভিযোগ।
সুনীলের দাবি, তিনি চাঁদা দিতে অসম্মত হলে তাঁকে মারধর করতে শুরু করেন তাঁরা। সেই সময় এলাকার বাসিন্দারা জড়ো হয়ে পাল্টা প্রতিরোধ করেন এবং চাঁদা আদায় করতে আসা এক যুবককে পাল্টা মারধর করা হয়। এরপরই তাঁরা পালিয়ে যান। সেই সময় যুব তৃণমূল নেতা শুভঙ্করও সেখানে ছিলেন। সুনীল বলেন, “আমি বাজারের দিকে যাচ্ছিলাম। সে সময় শুভঙ্কর এবং তার কিছু সঙ্গী আমাকে দাঁড় করিয়ে কালীপুজোর চাঁদা বাবদ ১০ হাজার টাকা দাবি করে। আমি এত টাকা দিতে পারব না জানালে আমাকে ওরা মারধর শুরু করে।” রাতেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সুনীল। ঘটনার কথা জেনে শুভঙ্করের বাড়িতে যান ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তপন। তাঁদের মধ্যে বচসাও হয়। তপন বলেন, “চাঁদার জন্য জুলুম আমাদের দল মেনে নেবে না।’’ সুনীল বলেন, “শুভঙ্কর এবং তার দলবল পুজোর চাঁদার নামে জুলুম করছে। ব্যবসায়ীদের থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ দাবি করছে। তা নিয়ে মানুষ ক্ষুব্ধ।’’
যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে শুভঙ্কর দাবি করেন, চাঁদা নিয়ে জুলুম নয়, এলাকায় পুরনো বিবাদ নিয়ে বচসার জেরে একজনকে মারধর করেন সুনীলের সঙ্গীরা। তিনি বলেন, “আমি এই পুজো কমিটির কোনও পদে নেই। এলাকার পুজো। আর ওঁর কাছে কোনও চাঁদা চাওয়া হয়নি। বরং ওরাই একজনকে মারধর করে।’’
তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা স্থানীয় বিধায়ক শঙ্কর সিংহ বলেন, “চাঁদার জুলুম আমরা সমর্থন করি না। দলের কেউ যুক্ত থাকলে তা বরদাস্ত করা হবে না। ওখানে ঠিক কী হয়েছে, তা খোঁজ নিচ্ছি।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনার পর বৃহস্পতিবার রাতেই ফুলিয়ার উদ্বাস্তু কো-অপারেটিভ বাজারে এক ব্যবসায়ীর কাছে মোটা অঙ্কের চাদা দাবি করার অভিযোগ ওঠে। পরে স্থানীয়রা প্রতিরোধ করেন এবং একজন চাঁদা আদায়কারীকে মারধরও করা হয়। ঘটনায় শুভঙ্করের ঘনিষ্ঠদের দিকেই আঙুল উঠেছে।