প্রতীকী ছবি।
জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। বিশেষত জেলার দক্ষিণ অংশে করোনা সংক্রমণ কমা দূরে থাক, প্রতিদিন লাফিয়ে বাড়ছে। উত্তর ২৪ পরগনা সংলগ্ন কল্যাণী, হরিণঘাটা, চাকদহ নিয়ে চিন্তিত কর্তারা। জেলাশাসক বিভু গোয়েল অবশ্য বলছেন, ‘‘জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গাইডলাইন মেনে যা যা পদক্ষেপ করার সবটাই করা হচ্ছে। কিন্তু মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে।’’ এর মধ্যেই আবার শুক্রবার জেলার ভূমি রাজস্ব দফতরের এক কর্তা এবং কৃষ্ণনগর এলাকার এক প্রাক্তন কাউন্সিলার করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন।
কল্যাণী-সংলগ্ন উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচড়াপাড়া, নৈহাটি ও হালিশহর এলাকা থেকে প্রচুর মানুষ প্রতিদিন নদিয়ায় আসেন। জেএনএম হাসপাতালেও ভিন জেলার অনেকে ভিড় করেন। কল্যাণী আবার লেখাপড়ার অন্যতম কেন্দ্র। এমনকি, বাজার করার মতো সামান্য কারণেও ওই সব রেড জোন থেকে মানুষ আসেন নদিয়ার এই শহরে। আবার কল্যাণী থেকেও বহু মানুষ প্রতিদিন উত্তর ২৪ পরগনা ও কলকাতায় যান মূলত পেশার কারণে। একই অবস্থা হরিণঘাটা এলাকাতেও। হরিণঘাটা সংলগ্ন উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া ও গাদামারা হাটে হরিণঘাটা এলাকার অনেকে ব্যবসার প্রয়োজনে যান। নদিয়ার নগরউখড়া ও ঝিকরা হাটে আসেন উত্তর ২৪ পরগনার মানুষ। একই সঙ্গে, চাকদহ ও মদনপুরের হাটে প্রতিদিন পড়শি জেলা থেকে শয়ে-শয়ে মানুষ আসছেন। মাঝে ঝিকরার হাট কিছু দিন ধরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সাত দিন টানা বন্ধ থাকার পর দিন কয়েক আগে নগরউখড়ার হাট খুলেছে। আবার তা বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দা জেলা পরিষদের পূর্ত দফতরের কর্মাধ্যক্ষ চঞ্চল দেবনাথ। তিনি বলেন, ‘‘গাদামারার হাট এখনই বন্ধ করে দেওয়া দরকার। বিষয়টা নিয়ে ভাবার প্রয়োজন আছে।’’
শান্তিপুর, রানাঘাট, কৃষ্ণনগরেও আক্রান্ত বাড়ছে। রানাঘাট শহর-সংলগ্ন রানাঘাট ১ ব্লক এলাকা ও কৃষ্ণনগর শহর সংলগ্ন কৃষ্ণনগর ১ ব্লক এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা কর্তাদের বিশেষ চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই শহরগুলিতেও প্রচুর বাইরের লোক আসে। কৃষ্ণনগর শহরে বাইরে থেকে আসা লোকের সংস্পর্শেই অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন। প্রথম থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের কারণে তেহট্ট ১ ব্লক আক্রান্তের সংখ্যায় জেলার অন্যান্য এলাকাকে পিছনে ফেলে দিয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি তাকে অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা সংলগ্ন চাকদহ ব্লক। চাকদহ পুরসভা এলাকাতেও বেড়ে চলেছে সংক্রমণ। অথচ, এই এলাকায় দু’টি বড় হাট চলছে। যেখানে প্রতিদিন উত্তর ২৪ পরগনা থেকে ভিড় করছেন শয়ে-শয়ে আনাজ ব্যবসায়ী।
আশ্রয় কোথায়
মোট কন্টেনমেন্ট জোন-২৪৭
কৃষ্ণনগর-১০
রানাঘাট-২০
শান্তিপুর-৭
চাকদহ-১১
হরিণঘাটা-৫
কল্যাণী-১৩
কোভিড হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা-২৭০
কার্নিভাল-১২০ শয্যা
রোগী-৭৬ জন
খালি-৪৪ শয্যা
গ্লোকাল-১৫০শয্যা
রোগী-৪০জন
খালি-১১০ শয্যা
চারটি সেফ হোমের শয্যা সংখ্যা-২১০ শয্যা
রোগী-১৪৩ জন
খালি-৬৭
জেলা শাসক বিভু গোয়েল বলেন, ‘‘চাইলেও আন্তঃজেলা যাতায়াত বন্ধ করা যায় না। রাজ্যের নির্দেশিকা হল, হাট বন্ধ না করে তাকে আরও বড় জায়গায় ছড়িয়ে দিতে হবে। পারস্পরিক দূরত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।’’ তিনি বলেন, "সাধারণ প্রশাসন ও পুলিশ যৌথ ভাবে সেই চেষ্টাই করছে। মানুষকেও একটু সচেতন হতে হবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘মুখ্যসচিবের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স ছিল। সেখানে সব জেলাশাসকই ছিলেন। উত্তর ২৪ পরগনার প্রশাসনও তাদের মত করে পদক্ষেপ করছে।’’