এই পরিস্থিত তৈরি হয় গত রবিবার। ফাইল চিত্র
গ্রামীণ মহিলাদের মধ্যে ইন্টারনেট সচেতনতা বাড়াতে দেশ জুড়ে কাজ শুরু করেছে একটি বহুজাতিক সংস্থা। এ রাজ্যে তাদের পদার্পণ বছর তিনেক আগে। কিন্তু এনআরসির ধাক্কায় মুখ থুবড়ে পড়ল তাদের কাজ। ওই প্রকল্পে যে সব স্থানীয় সেচ্ছাসেবী সংস্থা কাজ করছে তাদের কর্মীদের বাড়িতে চড়াও হয়ে তথ্য সংগ্রহের কারণ জানতে চেয়ে হাংমলা চালাল গ্রামবাসীদের একাংশ। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সে খবর এসেছে বলে জানিয়েছেন পঞ্চায়েত দফতরের কর্মীরা।
শনিবার হরিহরপাড়ায় ওই সংস্থার কর্মীদের বাড়িতে হামলার পর থেকে গোটা জেলাতেই ছড়িয়ে পড়ে সেই খবর। রবিবার সন্ধে থেকে ডোমকল থানার পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়েছে পরিস্থিতি সামাল দিতে। পুলিশের দাবি, সাধারণ মানুষ এনআরসি নিয়ে আতঙ্কিত, ফলে যে কোনও ধরনের তথ্য সংগ্রহ করতে গেলেই আক্রান্ত হচ্ছে সরকারি বা সেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা ঘটনার খবর পেলেই ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে আক্রান্তদের উদ্ধার করছি। এ সচেতনতা না ফিরলে এ পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিণ।’’
ওই সেচ্ছাসেবী সংস্থার এক কর্মীর কথায়, ‘‘যাঁরা এই কাজ করে তাঁদের দু' স্মার্ট ফোন-সহ ইন্টারনেট কিট দেওয়া হয়। মহিলাদের ইন্টারনেট সেখানোর জন্য একটি টার্গেট বেঁধে দেওয়া হয়। যাঁরা ওই প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তাঁদের কাছে বিভিন্ন তথ্য জানতে গিয়েই ওই বিপত্তি।’’ সংস্থার এ রাজ্যের কো-অর্ডিনেটর সুফি রেজা বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের কাছে আমাদের আবেদন অযথা আতঙ্কিত হবেন না। প্রয়োজনে আমাদের কাজ নিয়ে প্রশাসনের কাছে জেনে নিতে পারেন, আমরা গোটা বিষয়টি মঙ্গলবার তাঁদের জানিয়েছি। তা ছাড়া ইন্টারনেটে আমাদের কাজ নিয়ে যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাবে।’’
শনিবার হরিহরপাড়া এলাকার ধরমপুর দিয়ে শুরু হয়েছিল ওই গণ্ডগোলের। রবিবার হরিহরপাড়া, ছাড়াও নওদা, ডোমকলের শিবনগরে আক্রান্ত হয় এক মহিলা। সোমবার কুপিলা গ্রামে মনোয়ারা বিবির বাড়িতে ঘেরাও করে গ্রামের শতাধিক মানুষ। আর মঙ্গলবার ডোমকলে দফায় দফায় ঘটেছে সেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীদের বাড়িতে চড়াও হওয়ার ঘটনা। অন্যদিকে মঙ্গলবার সকাল দশটা নাগাদ ভগবানগোলা পলাশবাটি ঘাটের বাসিন্দা মর্জিনা খাতুনের বাড়ি ঘেরাও করে স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এনআরসির জন্য তথ্য নিচ্ছিল মর্জিনা। যদিও মর্জিনা ওই বেসরকারি সংস্থার হয়ে কাজ করতেই কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে চেয়েছিলেন।