বিপিএল তালিকাভূক্তরা সে তালিকায় ঠাঁই পেয়েছিলেন আগেই।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্পের আওতায় এ বার জায়গা পেতে চলেছেন— রাজ্যের আশাকর্মী থেকে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য থেকে হোমগার্ড কিংবা সিভিক ভলিন্টিয়ার— নিম্ন আয়ের সব পেশার মানুষজনই।
নদিয়া জেলা প্রশাসন জানাচ্ছেন, প্রকল্পের আওতায় নদিয়ার অন্তত দু’লক্ষ ১২ হাজার পরিবারের অর্ন্তভূক্তির সম্ভাবনা নিশ্চিত। তবে, নিছক নদিয়া জেলা নয়। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য জুড়ে ওই অন্তর্ভূক্তি নিছক সময়ের অপেক্ষা। সংখ্যার নিরিখে যা কয়েক লক্ষ বলেই জানাচ্ছেন, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কর্তারা।
নদিয়া জেলায় বিপিএল এবং একশো দিনের কাজের জব কার্ডধারী— ৩ লক্ষ ৮৮ হাজার পরিবার রয়েছেন। আছেন, ৭৫ হাজার তাঁত শিল্পীও। এ বার সেই স্বাস্থ্যসাথি প্রকল্পের নয়া তালিকায় সংযুক্তি ঘটছে আরও দু’লক্ষ ১২ হাজার পরিবারের। শুক্রবার দুপুরে কৃষ্ণনগর ২ ব্লকের ধুবুলিয়ায় ‘স্বাস্থ্য সাথি’ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন নদিয়া জেলাপরিষদের সভাধিপতি বাণীকুমার রায়। অন্তর্ভূক্তির কথা জানা গিয়েছে সেই অনুষ্ঠানেই।
পড়শি জেলা মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও জানিয়েছেন, ৩১ জানুয়ারি থেকে স্বাস্থ্যসাথি প্রকল্পে স্মার্ট কার্ড দেওয়া শুরু হচ্ছে ওই জেলায়। প্রাথমিক ভাবে প্রকল্পের কাজ শুরু হবে অনগ্রসর ডোমকল ও জঙ্গিপুর ব্লকে। তার পর জেলার অন্য এলাকাতেও ওই কার্ড বিলি বণ্টন শুরু হবে। তিনি বলেন, ‘‘পয়লা মার্চের আগে যাতে সকলেই ওই স্মার্ট কার্ড হাতে পান সে জন্য সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, এই প্রকল্পে ৩ লক্ষ ৪০ হাজার পরিবার ওই সুবিধা পাবেন। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যবিমা যোজনা প্রকল্পে ৬ লক্ষ পরিবার পরিষেবা পান। তা ছাড়াও রয়েছেন, সাড়ে ৫ হাজার তাঁতশিল্পী পরিবারও, যাঁরা গত কয়েক বছর ধরে স্বাস্থ্যসাথীর অন্তর্গত।
এখন প্রশ্ন, কারা এই প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন? স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের এক আধিকারীক বলেন, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য থেকে শুরু করে চুক্তিভিত্ত্বিক কর্মী, দৈনিক ও নিম্নআয়ের কর্মচারীরা এই সুয়োগ পাবেন। স্বামী, স্ত্রী এবং তাঁদের বাবা মা এমনকী ১৮বছর পর্যন্ত সন্তানেরাও এই প্রকল্পের আওতাভূক্ত।
প্রকল্পে বিনামূল্যে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা পরিষেবা মিলবে। রাজ্যের যে কোনও হাসপাতালে ভর্তি হলেই এই প্রকল্পের সুবিধা মিলবে। রয়েছে, প্রায় ১৯০০ প্রকার রোগের চিকিৎসার সুযোগ।
হাসপাতলে থাকাকালীন রোগীর খাওয়ার খরচও জোগাবে ওই নয়া বিমা। হাসপাতাল থেকে ছুটি পাওয়ার পরে প্রথম পাঁচ দিনের জন্য বিনামূল্যে ওষুধ মিলবে। এমনকী যাতয়াতের জন্য পাওয়া যাবে ২০০ টাকা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যবিমা যোজনা প্রকল্পের আওতায় এই মুহূর্তে প্রায় সাড়ে চার লক্ষ পরিবার আছে।
তাঁদের এককালীন ৩০ টাকা দিয়ে নাম নথিভুক্ত করতে হয়েছে। তাঁদের বিমার প্রিমিয়াম কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার বহন করে। তাঁরা বছরে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা পেয়ে থাকেন।
প্রকল্পের উপভোক্তাদের বিমার জন্য প্রাথমিক ভাবে কোনও টাকা দিতে হচ্ছে না। রাজ্য সরকারই বিমা সংস্থার হাতে তুলে দেবে বিমার প্রিমিয়াম। ক্যান্সার থেকে কিডনি সমস্যা— ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা মিলবে বলে স্বাস্থ্যসাথি প্রকল্প সূত্রে জানা গিয়েছে।