ঘরের পথে শব্দবাজি। নিজস্ব চিত্র
পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে কালীপুজোর আগে নিষিদ্ধ শব্দবাজি নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়, যেমনটি প্রতি বছর হয়ে থাকে। আবার আড়ালে-আবডালে প্রতি বছরই যেমন বাজারে বিক্রি হয় নিষিদ্ধ শব্দবাজি, এ বারও বিক্রি হচ্ছে। অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু নিষিদ্ধ শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। সচেতনতাও চলছে। তার পরেও বহরমপুর তথা জেলার বিভিন্ন এলাকার বাজার ছেয়েছে নিষিদ্ধ শব্দবাজিতে। এ বছর অবশ্য পুজোর ঠিক আগের তিন দিন টানা বৃষ্টি বাজির বাজারে প্রভাব ফেলেছিল। কিন্তু শনিবার সকালে সেই বৃষ্টি থমকে যেতেই বাজির বাজার ফের চাঙ্গা হয়েছে। সঙ্গে দেদার বিকোচ্ছে এলইডি চেন।
বহরমপুর থেকে কান্দি, লালবাগ থেকে লালগোলা, রঘুনাথগঞ্জ থেকে ফরাক্কা, বেলডাঙা থেকে নওদা—সর্বত্রই আতসবাজির আড়ালে শব্দবাজি বিকোচ্ছে বলে অভিযোগ। ফলে এ দিন সকাল থেকে শব্দবাজির কারবার জাঁকিয়ে বসেছে নবাবের জেলায়। বাজি ব্যবসায়ীরা সামনে আতসবাজি সাজিয়ে বিক্রি করছেন। বাজি কিনতে গিয়ে প্রাথমিক ভাবে মনে হতে পারে, বাজি বোধহয় বিক্রি হচ্ছে না দোকানে। কিন্তু কিছু ক্ষণ দাঁড়িয়ে আতসবাজি নিয়ে নাড়াচাড়া করলেই দোকান মালিক কানের কাছে এসে ফিসফিস করে জানতে চাইছেন—‘বাজি লাগবে নাকি?’
এর পরেই দোকানের পিছনের কোনও গোপন জায়গায় রাখা নিষিদ্ধ শব্দবাজি প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগবন্দি করে নিয়ে এসে হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন। এ ভাবেই আতসবাজির আড়ালে চলছে শব্দবাজির কারবার।
তবে দূষণ রুখতে শব্দবাজিতে রাশ টেনেছে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড বা সিপিসিবি। সিপিসিবির নিয়মে বলা রয়েছে, কালীপুজোয় সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ৬৫ ডেসিবেলের উপরে বাজি ফাটানো যাবে না। রাত ১০টা থেকে রাত ২টো পর্যন্ত ৫৫ ডেসিবেলের নীচে রাখতে শব্দবাজির নিয়ন্ত্রণ মাত্রা। কিন্তু আদৌ কী সেই নিয়ম মানা হবে? প্রশ্ন বহরমপুরের মানুষের। তাঁদের দাবি, দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের নিয়ম মানা হচ্ছে না, এমনকি প্রশাসনের বিধিনিষেধকেও তোয়াক্কা না করেই ফাটানো হয় বাজি। জেলা পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলছেন, ‘‘শব্দবাজি রুখতে আমরা তৎপর। শব্দবাজি ফাটানো হলেই পুলিশ কড়া পদক্ষেপ করবে।’’
পুজোর বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই আলোয় সেজে ওঠা পাড়া-বাড়ি থেকে বিভিন্ন আবাসন। বৃষ্টিতে তা বন্ধ ছিল। বৃষ্টি বন্ধ হতেই এ দিন সন্ধ্যার পরে ফের আলোয় সেজে উঠেছে, তেমনি বাজি ফাটাতে শুরু করেছে। তবে এ ব্যাপারে পুলিশ ও প্রশাসন কতটা সতর্ক থাকবে, তা নিয়েও সংশয়ে বহরমপুরের মানুষ।