প্রতীকী ছবি।
সদ্য পেশ হওয়া কেন্দ্রীয় বাজেট নিয়ে শান্তিপুরের তাঁতশিল্পীদের আশা ছিল অনেক। কিন্তু তাঁতশিল্পে জিএসটি রদ না হওয়ায় অনেকেই হতাশ। আবার আমদানি কমিয়ে দেশীয় পণ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথায় আশার আলো দেখছেন কেউ-কেউ। তবে সেই কাজ কতটা হবে বা কী ভাবে হবে তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে অনেক তাঁতশিল্পীর মনে।
শান্তিপুর, ফুলিয়া এলাকার বহু বাসিন্দা তাঁতশিল্পের উপরে নির্ভরশীল কয়েক প্রজন্ম ধরে। তাঁত বোনা তো আছেই, এই শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে যুক্ত নানা কাজে অনেকে নিযুক্ত।
এর আগে তাঁতশিল্পের ওপরে জিএসটি চালু হওয়ায় তাঁদের ওপরে আঘাত আসছে বলে দাবি করেছিলেন তাঁতিরা। তাই তাঁতশিল্পে জিএসটি তুলে নেওয়ার দাবি ছিল আগেই। শান্তিপুরের তাঁতবস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি তারক দাস বলেন, “জিএসটি ভার লাঘব করা হলে তাঁতশিল্পী এবং ব্যবসায়ী সকলেরই সুবিধা হত। তা নিয়ে বাজেটে কোনও কথা বলা হল না। আমরা খুবই হতাশ।” ফুলিয়ার বাসিন্দা বস্ত্র ব্যবসায়ী তথা তাঁতশিল্পী বীরেন বসাক বলছেন, “তাঁতশিল্পের কথা ভেবে এই শিল্পে জিএসটি মকুব করা হলে ভাল হত।”
এই বাজেটে তাঁতশিল্পে আমদানি কমাতে বিশেষভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এর জন্য প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা খরচ করা হবে। আমদানি কমালে সে ক্ষেত্রে দেশজ শিল্পের পক্ষে উপকার হবে বলে মানছেন অনেকেই। কিন্তু কী ভাবে এই কাজ করা হবে এখন সে দিকে
তাকিয়ে তাঁতশিল্পীরাও।
রাজনৈতিক মহলেও তাঁতশিল্পের বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। ফুলিয়ার বাসিন্দা এবং ভারতীয় মজদুর সংঘের জেলার সাধারণ সম্পাদক জ্ঞানমোহন বসাক বলেন, “তাঁতশিল্পে জিএসটি কমানো হলে তাঁতশিল্পীদের কিছুটা সুবিধা হত তো বটেই। তবে তাঁতশিল্পের ক্ষেত্রে বিপণনের সুবিধা হবে এমন বেশ কিছু প্রকল্প বাজেটে বলা হচ্ছে। আমদানি কমিয়ে দেশজ তাঁতপণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। এতে তাঁতশিল্পের সঙ্গে যুক্ত সকলে
উপকৃত হবেন।”
আবার আশাপ্রদ কিছু দেখছেন না সিটুর ফুলিয়া লোকাল কমিটির সম্পাদক মৃনালকান্তি ঘোষ। তিনি বলেন, “আমদানি কমিয়ে আনার কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু তা কী ভাবে করা হবে এবং এতে নিচুতলার তাঁতশিল্পীরা কতটা উপকৃত হবেন বা আদৌ হবেন কি না তা নিয়ে আমাদের সন্দেহ আছে।”