যাত্রী নেই। সওয়ারির অপেক্ষায়। লালবাগে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।
প্রতিদিনের মতোই নিজের খাবার হোটেল খুলে সাজিয়ে পর্যটকের অপেক্ষায় বসেছিলেন লালবাগের হাজারদুয়ারি চত্বরের এক হোটেলের মালিক সুপ্রিয় চৌধুরী। তবে, তাঁর সব আশায় জল পড়ল। গলায় হাতাশার সুর নিয়ে সুপ্রিয়বাবু বলছেন, ‘‘সব নষ্ট হল। এক্সট্রা কর্মীও নিয়েছিলাম কাজের জন্য কিন্তু ওই কর্মীদের টাকা কিভাবে মেটাব তাই ভেবে পাচ্ছি না।’’ চুম্বকে এটাই ছিল বর্ষশেষের দিনের ব্যবসার ছবি। তেমনভাবে দেখা মিলল না পর্যটকদের। কাজেই বছরের শেষ দিনও হতাশাতেই কাটল লালবাগের পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত সকলের।
পর্যটনের উপর নির্ভর করেই শহরের একাংশের মানুষের জীবন জীবিকা নির্বাহ হয়। গত বছরও এনআরসি-র ঝামেলা নিয়ে বছরের শেষ দিনেও পর্যটকদের দেখা মেলেনি। কিন্তু এই বছর তো ভালই পর্যটকদের আনাগোনা ছিল শহরে। যেখানে বছরের শেষদিনে তো ভিড় ভাঙে পর্যটকদের এই বছরও এমনটা কেন? উত্তরে শহরের পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত সকলেই জানাচ্ছেন, বছরের শেষ দিন বৃহস্পতিবার এবং নতুন বছরের প্রথমদিন শুক্রবার। কিন্তু শুক্রবার হাজারদুয়ারি বন্ধ থাকে। কাজেই যারা শহরের থেকে ঘুরতে আসে সেই পর্যটকেরা আসেননি। যা পর্যটক ছিল তা কাছাকাছির। সকলের আশা সামনের শনি ও রবিবার পর্যটকদের ভিড় ভাঙবে শহরে।
সূত্রের খবর এ দিন, শহরে বড় বাস এসেছে মাত্র খান পাঁচেক যা গত সপ্তাহেও গড়ে অন্তত কুড়িটা এসেছে। এ ছাড়াও ছোট গাড়ির যা এসেছে তার সংখ্যা কম। হাজারদুয়ারি চত্বরে চা ও টিফিন খাবারের দোকান রয়েছে সঞ্জীব প্রামানিকের এদিন তিনি বললেন, "বাইরের পর্যটক নেই। বছরের শেষ দিনও সেই হতাশই করল। বছরের শুরুর দিনও হতাশাতেই কাটবে সামনে শনি ও রবিবার ভিড় জমবে বলেই আশা করছি।’’
এদিন এক টাঙা চালক জাহাঙ্গির শেখ বললেন, ‘‘সকাল থেকে মাত্র একটা ভাড়া পেয়েছি বসেই রয়েছি বাইরের পর্যটক নেই। আশা করছি শনি ও রবিবার ভিড় ভাঙবে।"
এদিন মুর্শিদাবাদ সিটি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বছরের শেষ হতাশার মধ্যেই কাটল শহরের পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত সকল ব্যবসায়ীর। আশা করছি শনি রবি ভিড় জমবে।’’
তবে শহরের মানুষের বক্তব্য, করোনার নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ভিড় কম হওয়াই ভাল হয়েছে।