ফাইল চিত্র
এতদিন আইন থাকলেও তার প্রয়োগ ছিল না, আর তার ফলেই কোনরকম বিধি-নিষেধ না মেনেই মশারি জাল নিয়ে ইলিশের মরসুমেও মাছ ধরতে পারতেন মৎস্যজীবীরা। কিন্তু এ বার বিষয়টি নিয়ে কড়া হয়েছে প্রশাসন, এমনকি শুক্রবার সকালে বিএসএফের তরফে মৎস্যজীবীদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে পদ্মা নদী থেকে। বিএসএফের দাবি, এই সময়ে ইলিশ মাছ ধরা বারণ ফলে মৎস্যজীবীদের মাছ ধরতে বারণ করেছি আমরা। অন্য দিকে মৎস্যজীবীদের দাবি, সামনে পুজো, দিন কয়েক থেকেই উঠতে শুরু করেছে ইলিশ। ইলিশ না ধরতে পারলে মহাজনের ঋণশোধ করাও কঠিন হয়ে পড়বে। পুজোতে একটু আনন্দ করার ইচ্ছে থাকলেও উপায় থাকবে না।’’
মৎস্যজীবীদের একাংশ ক্ষুব্ধ হলেও মৎস্য বিশেষজ্ঞ থেকে প্রশাসন বলছে, এতে আখেরে লাভ হবে মৎস্যজীবীদের। কারণ এই সময়ে মিঠা জলে ইলিশ ডিম পাড়তে আসে সমুদ্র থেকে, ফলে সেই ডিম পাড়ার আগে মা ইলিশ ধরা পড়ে তা হলে আগামীতে ইলিশ বিলুপ্ত হয়ে পড়বে। ফলে প্রশাসন এবার যে উদ্যোগ নিয়েছে তাকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন তারা। জেলার মৎস্য বিশেষজ্ঞ সূর্যেন্দু দে বলছেন, ‘‘এটা নিঃসন্দেহে একটা ভাল উদ্যোগ। যেভাবে ইলিশ হারিয়ে যাচ্ছে তাতে এই পদক্ষেপ না করলে আগামীতে ইলিশ থেকে বঞ্চিত হব আমরা।" অন্যদিকে জলঙ্গির শিরচরের মৎস্যজীবী অমৃত মন্ডল বলছেন, ‘‘গত বছর একটা দুর্ঘটনা ঘটার পরেই ইলিশ ধরা বন্ধ হয়ে পড়েছিল আমাদের। এ বছর আবার নতুন করে আইনের বেড়াজালে পড়ে ইলিশ ধরতে পারছিনা, ফলে ইলিশের আশায় মহাজনের কাছ থেকে যে ঋণ করেছিলাম সেটা আর শোধ দিতে পারব না।’’
প্রশাসনের তরফেও এ বছর কড়া হাতেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে মাছধরা নিয়ে। কাপড়া বা মশারি জাল ব্যবহার নিয়ে সরব হয়েছিল তারা। রানিনগরের বিডিও পার্থ চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘আমরা মাসখানেক আগেই নদীতে মাছ ধরা নিয়ে সচেতন করতে পথে নেমেছিলাম রানিনগরের রামনাবাদ এলাকায়। আশা করছি মৎস্যজীবীরা তাঁদের নিজের ভালটা বুঝতে পারবেন।" একাংশের মৎস্যজীবীদের দাবি, ‘‘আমরা বুঝতে পারছি এতে আখেরে লাভ হবে আমাদের। কিন্তু যে সময় পেটের ভাত জোগাড় করা কঠিন হয়ে পড়েছে, আমরা অসহায়।’’ এলাকার আরও এক মৎস্যজীবী সুকান্ত মন্ডল বলছেন, ‘‘কাপড়া জাল নিয়ে প্রশাসন আগে উদ্যোগ নিলে আমাদের আজ এমন হাল হত না।’’