প্রতীকী ছবি
বুধবার ফের লকডাউন। ফলে পাইকারি আনাজের হাটে দেখা নেই আনাজের পাইকার, ফড়ে বা মহাজনদের। আনাজ হাটে নিয়ে এসে বিপাকে পড়লেন চাষিরা। দু-তিন জন ফড়ে হাটে আসলেও আনাজের দাম হেঁকেছেন নিজেদের মতো। ফলে অধিকাংশ চাষি আনাজ বিক্রি না করেই আনাজ নিয়ে ঘরে ফিরলেন। অনেকে আবার কম দামেই হাটে বসে বিক্রি করলেন আনাজ। পাইকাররা হাটে না আসায় এদিন হরিহরপাড়ার বিভিন্ন হাটে বাজারে আনাজের দাম ছিল নাগালের মধ্যে। কিন্তু এদিন ক্রেতার সংখ্যা ছিল খুবই কম।
হরিহরপাড়ার মিঞারবাগান এলাকায় প্রতিদিন সকালে বসে পাইকারি আনাজের হাট। জানা গিয়েছে, প্রতিদিন ১৫-২০ জন আনাজের পাইকার হাটে আসেন আনাজ কিনতে। অতিবৃষ্টিতে আনাজ নষ্ট হয়ে যাওয়ার পরেও প্রতিদিন আট-দশটি আনাজ ভর্তি লরি পাড়ি দেয় কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। এমনকি ভিন রাজ্যেও। বহরমপুরের বিভিন্ন বাজার দখল করে থাকে এই এলাকার আনাজে।
আনাজের কারবারিরা বলছেন বুধবার লকডাউন ফলে সমস্ত ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকবে। তা ছাড়া আনাজ সংরক্ষণের কোনও ব্যবস্থা না থাকায় আনাজ পচে যাওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। ফলে মঙ্গলবার মিঞারবাগান, চোঁয়ার পাইকারি আনাজের হাটে পাইকারের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। আনাজের চাহিদা না থাকায় এদিন হরিহরপাড়া, চোঁয়ার খুচরো আনাজের দাম কমেছে অনেকটাই। এদিন মিঞারবাগান, চোঁয়ার পাইকারি হাটে পটল ২০ টাকা কেজি, ঢেঁড়শ ৬-৭ টাকা কেজি, বেগুন ৭-৮ টাকা কেজি, ওল ১৫-১৮ টাকা কেজি,লঐঙ্কা ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও নেওয়ারও লোক ছিল না। ফলে অনেক চাষিই আনাজ বিক্রি না করেই ঘরে ফিরেছেন। শ্রীহরিপুর গ্রামের চাষি মন্টু মণ্ডল বলেন, ‘‘এ দিন পাইকারের সংখ্যা ছিল কম। ফলে তারা মনগড়া দাম বলছিল। ওই দামে আনাজ বিক্রি করার থেকে ফেলে দেওয়া অনেক ভাল। তাই বলে পাইকার, ফড়েদের পকেট ভরিয়ে লাভ নেই তাই প্রায় এক মন পটল বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আনলাম।’’ মনিরুজ্জামান সেখ নামে এক পাইকার বলছেন, ‘‘লকডাউনের কারনে বুধবার গাড়ি বন্ধ থাকবে। আনাজ চালান করা যাবে না। ফলে আজ হাটে পাইকার কম এসেছে, দামও কম। এদিন একটি ছোট লরিও আনাজ ভর্তি হয়নি।’’
উল্টো চিত্র শহরে। বহরমপুরের বিভিন্ন বাজারে আনাজের দাম ছিল কিছুটা চড়া। স্বর্ণময়ী, নতুন বাজারের মত বাজারে এদিন খুচরো আনাজের দাম ছিল অনেকটাই বেশি। বহরমপুরের বিভিন্ন বাজারে মঙ্গলবার পটল ৫০ টাকা কেজি, বেগুন ৪০ টাকা কেজি, ঢেঁড়শ ২৫-৩০ টাকা কেজি, লঙ্কা ১৫০ টাকা কেজি দরেবিক্রি হয়েছে।
লকডাউনের কারনে বুধবার বাজার বন্ধ থাকবে। ফলে এদিন ক্রেতাদের ভিড়ও ছিল বেশি। এক আনাজ বিক্রেতা বলেন, ‘‘এ দিন আনাজের জোগান কম ছিল, অপরদিকে চাহিদা বেশি ছিল। ফলে দামও কিছুটা বেশি ছিল।’’ এদিন দুপুর হতে না হতেই অধিকাংশ বাজার থেকে উধাও হয়ে যায় আনাজ। জোগান কম থাকায় এদিন মাছের দামও ছিল চড়া।