—প্রতীকী ছবি।
মঞ্চে দলের নেতারা বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। তখনই দেখা গেল, সামনের দিকে একাংশ ফাঁকাই রয়ে গিয়েছিল।
মঙ্গলবার বিকালে চাকদহের শিমুরালি মনোসাপতার মাঠে নদিয়া দক্ষিণ জেলা তফসিলি মোর্চার ডাকা সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন মুকুল রায়। কিন্তু সভায় আশানরূপ লোক হয়নি। জেলার বিভিন্ন কর্মসূচিতে এই চিত্র লক্ষ করা যাচ্ছে বলে জানিয়েছে দলের একাংশ। এতে দলীয় নেতা-কর্মীদের অনেকেই হতাশ।
মুকুল রায়ের সভার পর সেই মাঠে দাঁড়িয়েই দলের এক সক্রিয় কর্মী বলেছিলেন, “গোষ্ঠী কোন্দলের জন্য এমন হল। দলের নদিয়া দক্ষিণ জেলার সভাপতি অশোক চক্রবর্তী এবং রানাঘাটের দলের সাংসদ জগন্নাথ সরকারে মধ্যে দূরত্ব তৈরী হওয়ার দাম দিতে হয়েছে।’’ এ দিনের সভায় জগন্নাথ নিজে আসেননি। তাঁর অনুগামীদেরও সে ভাবে দেখতে পাওয়া যায়নি। এর প্রভাব দলের উপর পড়তে পারে বলে এতে আশঙ্কিত অনেকেই।
পরিস্থিতির জন্য অশোক চক্রবর্তীকেই কার্যত দায়ী করেছেন জগন্নাথ-অনুগামী জেলার সহ-সভাপতি পঙ্কজ বসু। তিনি বলেন, “জগন্নাথ সরকার সকলের সঙ্গে মিলে যাচ্ছেন। অশোক চক্রবর্তী সেটা পারছেন না। কার্যকর্তাদের নিয়ে দল চালাতে পারছেন না। তিনি দলের মধ্যে সমান্তরাল সংগঠন তৈরি করছেন। এতে দলের ক্ষতি হচ্ছে।”
এই যুক্তি মানতে চাননি জেলা কিষান মোর্চার সভাপতি অশোক বিশ্বাস। তাঁর যুক্তি, ‘‘জেলা সভাপতি সংগঠন দেখবেন। সেই কারণে অশোক চক্রবর্তী দলের কাজ করার জন্য যা করার করে চলেছেন। জগন্নাথ সরকার সাংসদ। তিনি জনপ্রতিনিধি। তাঁর কাজ জনগণের উন্নয়ন করা। তাই তিনি মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন। এর মধ্য দিয়ে দলের গোষ্ঠীকোন্দল প্রমাণিত হয় না। তাঁরা দু’জনেই দলের হয়ে কাজ করে চলেছেন।’’
আর জেলা সভাপতি অশোক চক্রবর্তীর কথায়, “এ সব আজগুবি খবর। আমাদের মধ্যে কোনও দূরত্ব তৈরি হয়নি। আমরা দু’জন মানুষ একটা আদর্শ নিয়ে লড়াই করি। আমরা এক জায়গায় ছিলাম। এক জায়গায় আছি।” জগন্নাথ সরকারের দাবি, “আমাদের মধ্যে কোনও দূরত্ব নেই। আমাদের কর্মীরা এ সব বিষয়ে হতাশ হন না। সবাই জানে, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় আসছে।”
দলের জেলা সভাপতি অশোক চক্রবর্তীর বক্তব্যের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “অনেকে বলেন, বিজেপিতে নেতা নেই। এক সময় তৃনমূলেও নেতা ছিল না। পরে সবাই নেতা হয়েছে। আমাদের এই জেলাতেই বিজেপিতে এত ভাল ভাল নেতা রয়েছেন যাঁদের দিয়ে গোটা রাজ্য চালানো যেতে পারে।”