ফাইল চিত্র।
কখনও মুর্শিদ হাসান, কখনও আবার মইনুল মণ্ডল কিংবা আবু সুফিয়ান— ডোমকল-জলঙ্গির বিভিন্ন গ্রামে জঙ্গি কার্যকলাপে জড়িতদের মধ্যে আল কায়দা’র সঙ্গে যোগাযোগের সেতু ছিল কে? প্রশ্নটা উঠে আসছে বারবার। এনআইএ-এর তদন্ত যত গড়িয়েছে ডোমকল এলাকায় প্রশ্নটা তত সেঁদিয়ে গিয়েছে এলাকার গ্রামীণ মানুষের অন্দরে। দিন কয়েক আগে দিল্লি থেকে সটান গ্রামে উড়িয়ে আনায় কলেজের অস্থায়ী কর্মী নিপাট কাজের ছেলে লিউইয়ন আহমেদকে ঘিরেই সেই উত্তর খুঁজছে এখন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে পুলিশ, সকলেই।
মঙ্গলবার দুপুরে তার বাড়িতে এনে লিউইয়নের ঘরে ফের ঘণ্টাখানেক তল্লাশি চালায় এনআইএ। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার ইশারায় স্পষ্ট, চক্রের মাথা হিসেবে আছে সে-ই। যদিও লিউইয়নের পরিবারের দাবি, তাদের বাড়ি থেকে মঙ্গলবার কোনও কিছুই উদ্ধার করতে পারেনি এনআইএ। তবে জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘অনুমান লিউইয়নের কাছ থেকে এমন কিছু তথ্য নিশ্চয় পেয়েছে এনআইএ যে জন্য তাকে উড়িয়ে আনা হয়েছে এই হদ্দ গ্রামে।’’
এই ঘটনায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন লিউইয়নের পরিচিতরাও। তাঁদের অনেকেরই দাবি, ঘরে যা ছিল তদন্তকারী সংস্থা তা নিয়ে গিয়েছে, এখন লিউইয়ন যদি কাউকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার জন্য কারও নাম বলে তা হলে! তার পরিচিত অনেকেরই প্রশ্ন— এ ভাবেই কি সকলকে অন্ধকারে রেখে বাড়িতে হানা দিয়ে গ্রেফতার করা হবে গ্রামীণ যুবকদের!
লিউইয়নের পরিবারের মতো আতঙ্কে আবু সুফিয়ানের পরিবার। তার ছেলে ওয়াসিম আক্রাম বলছেন, ‘‘আমার বিশ্বাস বাবাকে মিথ্যে অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে। আমাদের বাড়িতে শৌচাগারের সেপটিক ট্যাঙ্ককে বলা হয়েছে সুড়ঙ্গ। ফলে খুব আশঙ্কায় আছি, নতুন করে বাড়িতে এসে আবারও কোনও অভিযোগ তোলা হবে কি না, সেটা ভেবে।’’
এনআই সূত্রে অবশ্য দাবি, লিউইয়নকে জেরা করে এমন কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে, যা ওকে নিয়ে এসে যাচাই করা প্রয়োজন ছিল। সে জন্যই তাকে তড়িঘড়ি উড়িয়ে আনা। তাতে গ্রামের অন্যদের অনাবশ্যক দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই। তাকে জেরা করে বেশ কিছু গোপন তথ্যও যে ইতিনধ্যেই মিলেছে তা-ও জানিয়েছেন এনআইএ-র এক কর্তা।
তবে, মুর্শিদাবাদের পর এ বার নদিয়ার করিমপুর এলাকায় দু’জনের উপরেও নজর পড়েছে গোয়েন্দাদের বলে জানা গিয়েছে। এনআইএর হানার পর থেকেই করিমপুর এলাকার ওই দুই যুবক যে ঘরছাড়া তা-ও খবর পেয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।