New Year

বাজিতে বক্সে কাঁপল বর্ষশেষের নিশিরাত, উদ্‌যাপন দিনভর

বর্ষবরণের রাতে পুলিশ দৃশ্যতই অপ্রস্তুত। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর ও রানাঘাট শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:২৭
Share:

গাড়িতেই বক্স বাজিয়ে নাচ। জাতীয় সড়কে। নিজস্ব চিত্র।

দীপাবলি থেকে ছট পুজোয় বাজি নিয়ে নিয়ন্ত্রণ প্রায় পুরোপুরি বজায় ছিল। কিন্তু সেই সংযম শিকেয় তুলে বর্যবরণের রাতে জাগল শব্দদানব। তার সামনে কার্যত আত্মসমর্পণ করতে হল পুলিশ প্রশাসনকে।

Advertisement

করোনাকালে বাজি পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে হাইকোর্টের। তাই দীপাবলি ও ছটে আতশবাজি রুখতে প্রায় সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়েছিল পুলিশ। বাজারে বাজারে হানা দিয়ে বাজি বাজেয়াপ্ত করা ও বিক্রেতাদের গ্রেফতারের ফলে কারবার অনেকটাই গুটিয়ে গিয়েছিল। পুজোর রাতে পাড়ায় পাড়ায় বিশেষ নজরদারি চলায় খুব কম জনই বাজি পোড়ানোর সাহস দেখিয়েছে। কিন্তু বর্ষবরণের রাতে পুলিশ দৃশ্যতই অপ্রস্তুত।

বৃহস্পতিবার ঘড়ির কাঁটা রাত ১২টা পেরোতেই জেলার উত্তর থেকে দক্ষিণ জুড়ে বাজি-পটকার ধুমধাড়াক্কা শুরু হয়ে যায়। যদিও তা বেশিক্ষণের জন্য নয়। ইংরেজি বছরের শেষ রাতে বাজি প্রতি বছরই পোড়ে। কিন্তু এ বার ছাপিয়ে গিয়েছে সব বারকেই। বস্তত, দীপাবলি বা ছটের আগে লুকিয়ে বাজি কিনেও যারা পোড়াতে পারেনি, এ রকম অনেকের ঘরেই বাজি মজুত ছিল। সুযোগ পেয়েই অনেকে সলতেয় আগুন দিয়েছে। কৃষ্ণনগরের এক তরুণীর কথায়, “কালীপুজোর সময়ে কিছু বাজি কিনেছিলাম। কিন্তু পুলিশ এতটাই কড়াকড়ি শুরু করেছিল যে সেগুলো পোড়ানোর সুযোগ পাইনি। ঘরে রাখা ছিল। বর্ষবরণের রাতে সব পুড়িয়ে দিলাম।”

Advertisement

কল্যাণী হোক বা করিমপুর, নবদ্বীপ হোক বা ধানতলা, শান্তিপুর হোক বা রানাঘাট, হাঁসখালি হোক চাকদহ— ছবিটা একই। নজরদারি কি তা হলে একেবারেই ছিল না? প্রকাশ্যে না হলেও জেলা পুলিশের একাংশ মেনে নিচ্ছে, পুজোর দিনগুলিতে যত সক্রিয় ছিল তারা, এ দিন মোটেই তা ছিল না। তারই সুযোগ নিয়েছে অনেকে। তবে নববর্ষের আগে নতুন করে কোথাও বাজি বিক্রি হয়নি বলেই পুলিশের দাবি।

কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার বিশ্বজিৎ ঘোষ বলছেন,“বাজি যাতে না পোড়ে তার জন্য আমরা সব রকম ভাবে সজাগ ছিলমা। কিন্তু যত দিন না মানুষ নিজে সচেতন হচ্ছে তত দিন এ সব পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব না।”

তবে শুধু বাজি তো নয়। আর এক উৎপাত রাত বাড়তেই ডিজে বক্সের কান-ফাটানো আওয়াজ। বর্ষশেষের রাতে মাংস-ভাতের পিকনিকে বক্সের দাপাদাপি অনেকের ঘুম ছুটিয়েছে। বিকেল থেকে বিভিন্ন রাস্তায় ভ্যানে পাড়া কাঁপাতে-কাঁপাতে গিয়েছে ঢাউস ঢাউস সাউন্ডবক্স। সন্ধ্যার পরে গান-বাজনা আরও উচ্চগ্রামে উঠেছে। এ পাড়া-ও পাড়ায় ক্লাবের সামনে গভীর রাত পর্যন্ত বক্স বাজিয়ে চলেছে নাচানাচি। মধ্যরাত আসতে তার সঙ্গে যোগ হয়েছে বাজি পোড়ানো। অনেক জায়গায় হইচই শেষ হতে ভোরের আলো ফুটে গিয়েছে। শিমুরালির এক যুবকের কথায়, “কয়েকটা মাস ঘরে আটকে থেকে দম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। দুর্গাপুজো,কালীপুজোয় আনন্দ করতে পারিনি। বছরের শেষ দিনে সব সুদে-আসলে তুলে নিয়েছি।”

কল্যাণীর মহকুমাশাসক হীরক মণ্ডল অবশ্য দাবি করেন, “কোথাও কোনও অশান্তির খবর পাওয়া যায়নি। কোথাও শব্দবাজি ফেটেছে বা ত্বারস্বরে বক্স বেজেছে বলেও খবর নেই। কেউ অভিযোগ করেনি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement