উদ্ধার হওয়া মাদক। — নিজস্ব চিত্র।
কালো কাচে ঘেরা ঝাঁ চকচকে বিলাসবহুল গাড়ি। অভিযোগ, এমন দু’টি গাড়িতে করে পাচার করা হচ্ছিল বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ। জেলা এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ এবং স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের যৌথ অভিযানে গ্রেফতার হল ৪ পাচারকারী। পুলিশ সূত্রে জানি গিয়েছে, ওই পাচারচক্রের অন্যতম পাণ্ডা শাকিল আহমেদ স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার ভাইপো।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার বিকেলে কৃষ্ণনগর থেকে ওই দু’টি গাড়ি চাপড়ার দিকে যাচ্ছিল। গোপন সূত্রে জেলা এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ খবর পায়, কালো কাচে ঘেরা ওই গাড়ি দু’টি করে নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সীমান্তে পাচারের জন্য। খবর পাওয়া মাত্র স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের সদস্যরা দু’টি দলে ভাগ হয়ে শুরু করে নাকা তল্লাশি। এর পর সন্দেহভাজন গাড়ি দু’টি দেখতে পেয়ে থামান পুলিশকর্মীরা। গাড়ি দু’টিতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় ৯৯৬ বোতল নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ। অবৈধ মাদক পাচারের অভিযোগে গাড়ির দুই চালক-সহ মোট ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ওই বিপুল কাশির সিরাপ। শাকিল ছাড়াও বাকি ধৃতরা হলেন, আজিজুল শেখ, বাচ্চু মিস্ত্রি এবং মানিক শেখ। তাঁরা প্রত্যেকে চাপড়া থানা এলাকার বাসিন্দা। ধৃত শাকিল চাপড়ার তৃণমূল নেতা জাহান আলি মোল্লার ভাইপো বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
এ নিয়ে জেলা বিজেপির মুখপাত্র সন্দীপ মজুমদারের অভিযোগ, ‘‘গরুপাচার, কয়লাপাচার, বালিপাচার, আর নদিয়াতে চলে গাঁজা এবং কাশির সিরাপ পাচার। তৃণমূল নেতাদের ছত্রছায়ায় এ সব অবৈধ কারবার চলে।’’
এ নিয়ে জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র দেবাশিস রায় বলেন, ‘‘অপরাধীর সঙ্গে দলের কী সম্পর্ক? কাকা, ভাইপো, মামা, ভাগ্নি সকলের দায়িত্ব যদি নেতাকে নিতে হয় তা হলে বড্ড মুশকিল! অভিযুক্তর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’
এই পাচারচক্রের সঙ্গে আন্তর্জাতিক পাচারচক্রের কোনও যোগ আছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ধৃত ৪ জন ছাড়াও আর কারা যুক্ত তা নিয়ে তদন্ত চালানো হচ্ছে। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলা এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের ডিএসপি অমিতাভ কোনার বলেন, ‘‘গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আমরা গাড়ি দু’টিতে আটক করি। তল্লাশি চালানোর সময় ৯৯৬ বোতল কাশির সিরাপ উদ্ধার হয়েছে। ওই চক্রে আর কারা যুক্ত তা ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা হচ্ছে।’’