দিঘার সমুদ্রে নামতে না পেরে হতাশ পর্যটকরা। ফাইল চিত্র।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোকার প্রভাবে জলস্তর বাড়তে পারে, উত্তাল হতে পারে সমুদ্র। তাই স্থানীয় বাসিন্দা এবং পর্যটকদের জন্য আগেভাগেই সতর্কতা জারি করল দিঘা প্রশাসন। রবি এবং সোমবার সমুদ্রস্নানে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে। ফলে যে সব পর্যটক সপ্তাহান্তের ছুটি কাটাতে দিঘা গিয়েছেন, তাঁদের আপাতত সমুদ্রস্নান থেকে বিরত থাকতে হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা এবং পর্যটকদের সতর্ক করা জন্য মাইকে প্রচার চালাচ্ছে দিঘা কোস্টাল থানা। তাদের তরফে ঘোষণা করা হচ্ছে, “আবহাওয়াবিদদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় মোকার প্রভাবে সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। সেই সঙ্গে সমুদ্র উপকূলে বাতাসের গতিবেগও বাড়তে পারে। আর সেই কারণে আগামী ১৫ মে পর্যন্ত পর্যটকদের সমুদ্রস্নানে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল।” এই সময়ে সমুদ্র থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, সমুদ্রে সমস্ত রকম কার্যকলাপ বন্ধ রাখতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দিঘার হোটেল ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলিতে গরমের ছুটি চলায় অন্যান্য সময়ের তুলনায় দিঘায় পর্যটকদের ভিড় অনেকটাই বেশি। শনি, রবি এই ভিড় আরও বেশি হচ্ছে। হোটেলগুলিতেও পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে কয়েক গুণ। বাংলার উপকূলে মোকা আসছে না জেনে দিঘায় পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে। তবে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার পর পর্যটকেরা কিছুটা হতাশ বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
হুগলির কোন্নগর থেকে আসা রাহুল পাণ্ডে, কলকাতার ঠাকুরপুর থেকে আসা দীপালি দে সরকার বা রাজারহাট থেকে আসা সুরেশ শর্মা— সকলেই বক্তব্য এক— শনিবার দুপুরের পর থেকে দিঘায় প্রশাসনের তৎপরতা অনেকটা বেড়েছে। মাইকে প্রচারের পাশাপাশি পর্যটকদের সমুদ্র থেকে তুলে দেওয়া হচ্ছে। আগামী দু’দিনও সমুদ্রে স্নান করা যাবে না বলেই প্রচার করা হচ্ছে। এর জন্য তাঁরা কিছুটা হতাশ। পারে বসে সমুদ্র দেখেই এ বার বাড়ি ফিরতে হবে।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, শনিবার সকাল প্রচুর পর্যটক সমুদ্রে স্নান করলেও, বিকেল থেকেই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করা হয়েছে। বিশেষত জোয়ারের সময় পর্যটকদের সমুদ্রে নামার ক্ষেত্রে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পর্যটকদের সুরক্ষার কথা ভেবেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে এক প্রশাসনিক কর্তা জানিয়েছেন। সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠলে যাতে কোনও রকম দুর্ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়েও কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে বলে দিঘা থানা এবং দিঘা কোস্টাল থানা থেকে জানানো হয়েছে।
দিঘা হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দিঘায় এই মুহূর্তে পর্যটকদের ভাল ভিড় রয়েছে। হাঁসফাঁস গরম থেকে কিছুটা শান্তি পেতেই সমুদ্রের জলে ঝাঁপাতে দিঘায় ছুটে এসেছেন তাঁরা। কিন্তু প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার জেরে সমুদ্রে স্নান করা যাবে না। পর্যটকদের সুরক্ষার কথা ভেবে প্রশাসন যে পদক্ষেপ করেছে, তা মেনে চলাই উচিত।”