রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য ভাঙা পড়েছে নির্মাণ। ফুলিয়ায়। নিজস্ব চিত্র
জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য উচ্ছেদের কাজে ফের বাধা এল। বুধবার শান্তিপুর থানার জ্যোতিপল্লি এলাকায় কিছু স্থানীয় বাসিন্দা বর্ধিত ক্ষতিপূরণ-সহ নানা অভিযোগ তুলে উচ্ছেদে বাধা দেন। আজ, বৃহস্পতিবার রানাঘাটে মহকুমাশাসকের দফতরে প্রশাসনিক কর্তাদের ওই জমিদাতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা রয়েছে।
এর আগে হরিণঘাটা, চাকদহ, রানাঘাটের মতো জায়গায় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য উচ্ছেদের ক্ষেত্রে প্রশাসনকে সে ভাবে বাধা পেতে হয়নি। কিন্তু শান্তিপুর ব্লকের একাংশে বারবার বাধা আসছে। জমিদাতাদের একাংশের দাবি, তাঁরা অনেকেই আগে জমির জন্য যে ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন, নতুন আইন অনুযায়ী তা যথেষ্ট নয়। তা ছাড়া, আগে যে জমি নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল, এখন তা থেকে কয়েক ফুট বাড়িয়ে নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। অনেকে ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি বা ক্ষতিপূরণের অঙ্কের ক্ষেত্রে বৈষম্য হয়েছে বলেও অভিযোগ করছেন।
প্রশাসনের বক্তব্য, যখন জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল, সেই সময়ের আইন মেনেই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। সব কিছুই নিয়ম মেনে করা হচ্ছে। এর আগে জ্যোতিপল্লিতে উচ্ছেদের নোটিস নিতে অস্বীকার করেছিলেন জমিদাতাদের একাংশ। পরে প্রশাসনের তরফে মাইকে প্রচার করে, লিফলেট দিয়ে জমিদাতাদের বৈঠকে ডাকা হয়। সেখানেও বেশ কিছু জমিদাতা অনুপস্থিত ছিলেন। জানুয়ারির গোড়ায় জমি চিহ্নিকরণের কাজে এসে প্রথমে পেতে হয়েছিল প্রশাসনকে। পরে বড় পুলিশবাহিনী সঙ্গে নিয়ে এসে সেই কাজ শেষ করেন প্রশাসনের কর্তারা। বাসিন্দাদের উচ্ছেদের নোটিসও দেওয়া হয়।
বুধবার সকালে ওই এলাকায় যান অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি সংস্কার) নারায়ণচন্দ্র বিশ্বাস, রানাঘাটের মহকুমাশাসক হরসিমরন সিংহ, এসডিপিও (রানাঘাট) লাল্টু হালদার, শান্তিপুরের বিডিও সুমন দেবনাথেরা। কিন্তু উচ্ছেদের জন্য ভাঙাভাঙির কাজ শুরু করতেই বাধা দেন জমিদাতাদের একাংশ। অনগ্রসর জনজাগরণী মঞ্চের ব্যানার নিয়ে হাজির হয়েছিলেন তাঁরা। অনেকে যন্ত্রের সামনে বসে পড়েন। প্রশাসনের কর্তারা তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। তবে কাজ বন্ধ রাখা হয়।
নদিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি সংস্কার) নারায়ণচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, “বৈঠকে জমিদাতাদের সমস্যা নিয়ে কথা বলা হবে।” জনজাগরণী মঞ্চের সভাপতি সৈয়দ আহমেদ বলেন, “আগেই প্রশাসনের সঙ্গে কথা হয়েছিল, বৈঠকে নিষ্পত্তি হবে। তার পরেও এ দিন কেন ওঁরা হঠাৎ ভাঙতে এলেন? আমাদের সংগঠনকে লিখিত ভাবে বৈঠকে ডাকা হয়নি।”
ফলে বৈঠক শেষ পর্যন্ত ফলপ্রসূ হবে কি না, সেই সংশয় থাকছেই।