—প্রতীকী চিত্র।
চুরি-সহ একাধিক অভিযোগে স্বামী জেলবন্দি। আইনি পরামর্শের জন্য আইনজীবীর সঙ্গে কাছে যাতায়াতের সূত্র ধরে তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা শুরু হয় স্ত্রীর। বছর খানেকের মধ্যে মক্কেলকে জামিনে মুক্ত করিয়ে আনতে পেরেছিলেন আইনজীবী। কিন্তু মক্কেলের কানে তাঁদের সম্পর্কের কথা যেতেই খুনোখুনি! চুরির অভিযোগের পর এ বার স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে জেলযাত্রা। ওই মামলায় জামিন পেয়ে ‘স্ত্রীর প্রেমিককে’ও খুনের চেষ্টা করলেন যুবক। অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ, হামলা এবং পাল্টা হামলার অভিযোগ চলছে সেই ২০১৫ সাল থেকে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বার বার প্রাণঘাতী হামলার অভিযোগ ওঠার প্রেক্ষিতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিল জেলা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, ২০১৪ সালে একটি দোকানে চুরির অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন নদিয়ার হাঁসখালি থানার বগুড়ার বাসিন্দা আশিস মণ্ডল। আরও বেশ কয়েক’টি অভিযোগ ছিল। স্বামীকে ছাড়িয়ে আনতে আইনজীবীর দ্বারস্থ হন আশিসের স্ত্রী। রানাঘাট আদালতের এক আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। মামলার সূত্রে আইনজীবীর সঙ্গে প্রায়শই দেখাসাক্ষাৎ, কথাবার্তা হতে থাকে তাঁর। কিন্তু জেল থেকে বেরিয়ে আশিসের মনে হয়, স্ত্রীর সঙ্গে ওই আইনজীবীর ‘সম্পর্ক’ গড়ে উঠেছে। তাই স্ত্রীকে তিনি খুন করেন বলে অভিযোগ। যে আইনজীবীর সঙ্গে স্ত্রীর সম্পর্কের অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর অভিযোগ এবং তৎপরতাতে আবার জেলে যেতে হয় আশিসকে। খুনের মামলা বছর দুয়েক চলার পর ২০১৭ সালে এক বার জামিন পেয়েছিলেন আশিস। কিন্তু তখনও প্রতিহিংসার ‘নেশা’ যুবকের বুকে। আবার আদালতের দ্বারস্থ হন আইনজীবী। অভিযোগ, তাঁকেও খুনের চেষ্টা করেছেন আশিস। বছর খানেক পরে আবার গ্রেফতার হন অভিযুক্ত। তবে সে বার অন্য অভিযোগ। মাদক পাচারের। ওই মামলায় চার বছর জেলবন্দি থাকার পরে ২০২২ সালে আবার জামিনে মুক্তি পান আশিস। কিন্তু ওই আইনজীবীর রাগ নাকি তখনও যায়নি!
অভিযোগ, ছাড়া পেয়ে বেশ কয়েক বার ওই আইনজীবীকে খুনের চেষ্টা করেন স্ত্রীকে খুনে অভিযুক্ত আশিস। এ বার ‘প্রতিরোধ’-এর প্রস্তুতি নেন আইনজীবী। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আশিসের উপরে হামলার অভিযোগ ওঠে ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে। পুলিশ একটি আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছে। মেলে ১০ রাউন্ড গুলিও। গ্রেফতার হন আইনজীবী এবং তাঁর কয়েক জন সঙ্গী।
এই ‘দুশমনি’র যেন শেষ নেই। কিছু দিন পরে জামিনে মুক্ত হয়ে আইনজীবী বাড়ি ফিরতেই আবার তাঁর উপর প্রাণঘাতী হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে আশিসের বিরুদ্ধে। আবার গ্রেফতার হন আশিস। রানাঘাট পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লাল্টু হালদার বলেন, ‘‘আশিস ‘হ্যাবিচুয়াল অফেন্ডার’। এবার ওঁর বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ধারা প্রয়োগ করে কী ভাবে বেশি দিন আটকে রাখা যায় সে বিষয়ে আইনজীবীদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে।’’