—প্রতীকী চিত্র।
তরুণীকে নিজের বাড়িতে আটকে রেখে দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হল পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষকে। শুক্রবার এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল বাঁকুড়ার সোনামুখীতে। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই অভিযুক্তকে দল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করেছে তৃনমূল। একই সঙ্গে তাঁকে পঞ্চায়েত সমিতির পদ থেকে সরানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে বলে জানালেন তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্ব।
বাঁকুড়ার সোনামুখী ব্লকে তৃণমূলের দাপুটে নেতা হিসাবে পরিচিত অভিযুক্ত। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র সোনামুখী ব্লক সভাপতি পদে থাকার পাশাপাশি গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ের পর সোনামুখী পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ হন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, স্থানীয় এক তরুণীকে বাড়িতে আটকে রেখে তাঁকে দফায় দফায় যৌন নির্যাতন করেছেন। নির্যাতিতা কোনও ভাবে শুক্রবার ওই বাড়ি থেকে পালিয়ে আসেন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে সোজা সোনামুখী থানায় হাজির হন তিনি। ওই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন তরুণী। তৎপর হয় পুলিশ। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে অভিযুক্ত নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। নির্যাতিতার মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। এ নিয়ে নির্যাতিতা এবং অভিযুক্ত কারও তরফেই কোনও বক্তব্য মেলেনি। তবে বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, ‘‘ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়ার পরেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ উঠতেই তড়িঘড়ি তাঁকে দল থেকে সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করেন তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্ব। তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিক্রমজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ জানতে পারি আইএনটিটিইউসি-র সোনামুখী ব্লকের সভাপতির বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং নারী নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে দল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষের পদে রয়েছেন। সেখান থেকেও যাতে তাঁকে অবিলম্বে সরানো যায়, তার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ চাউর হতেই সরব হয়েছে বিজেপি। সোনামুখীর বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামি বলেন, ‘‘আমরা বার বার বলছি, শুধু সোনামুখীই নয় সারা রাজ্যে তৃণমূল নেতাদের সৌজন্যে সন্দেশখালির মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়ে রয়েছে। এই ঘটনা তারই প্রমাণ। এটা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ঘটনা। নিন্দা জানানোর ভাষা নেই আমাদের কাছে।’’ পাশাপাশি তাঁর কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূল অভিযুক্তকে সাসপেন্ড করলেও তা শুধুমাত্র লোকদেখানো। সপ্তাহ দুই পর আবার অভিযুক্তকে তৃণমূলের পতাকা হাতে নিয়ে ঘুরতে দেখা যাবে। আমরা তাঁর কঠোরতম শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’