চুঁচুড়ার মেলায় তৃণমূল সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
তাঁত বস্ত্র মেলা ঘুরে শাড়ি, সালোয়ার, গামছা ইত্যাদি কিনলেন হুগলির তৃণমূল সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুজোর মুখে মানুষকে উৎসবমুখী হতে আবেদন জানিয়ে জুনিয়র চিকিৎসকদেরও কাজে ফেরার ডাক দিলেন তিনি। রচনা জানান, আরজি করের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার বিচার তিনিও চান। কিন্তু বিচার তো তৃণমূল দেবে না। তাঁর কথায়, ‘‘মামলা এখন সিবিআইয়ের হাতে। আমরা চাই, দ্রুত এর বিচার হোক।’’
আরজি কর-কাণ্ডের কয়েক দিন পরে একটি ভিডিয়োয় শোকপ্রকাশ করতে গিয়ে সমাজমাধ্যমে ‘ট্রোল্ড’ হন রচনা। তার পর ঋতুপর্ণার ‘শঙ্খ বাজানো’ নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। দুটো ঘটনায় নেটাগরিকদের একাংশের ভূমিকার সমালোচনা করেছিলেন রচনা। অন্য দিকে, আরজি করের ঘটনার এক মাস পরেও উত্তাল রাজ্য। মহিলাদের নিরাপত্তা এবং বিচার চেয়ে আন্দোলনে বসেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। স্বাস্থ্য ভবন অভিযানের ডাক দিয়ে টানা সল্টলেকে অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। জট কাটাতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তিন বার সেই উদ্যোগ ‘ব্যর্থ’ হয়েছে। আলোচনার ‘লাইভ স্ট্রিমিং’-এ সরকার রাজি-না হওয়ায় বৃহস্পতিবারের আলোচনা ভেস্তে গিয়েছে। ওই প্রসঙ্গে হুগলির সাংসদ বলেন, ‘‘আমি বলছি না যে তাঁরা ভুল কাজ করছেন। আমি সব সময় তাঁদের সঙ্গে আছি। পাশে রয়েছি। কারণ, তাঁরা বিচার চাইছেন। আমরা সবাই বিচার চাইছি। আমরা চাই দোষী শাস্তি পাক। সাজা হোক। তার জন্যই ওই আন্দোলন, প্রতিবাদ। সেটাকে আমরা সমর্থন করি।’’ রচনার সংযোজন, ‘‘শুধু আমি নই, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের পাশে আছেন। কিন্তু চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জন্য অনেক মানুষ দুঃখ পাচ্ছেন। কষ্ট পাচ্ছেন। অনেক মানুষ মারা যাচ্ছেন। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। তাঁদের কথা ভেবে দেখলে ভাল হয়। তাই জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে আমার করজোড়ে আবেদন— আন্দোলন থাকবে। আন্দোলন করুন। কিন্তু কাজে ফিরে আসুন।’’
রচনা জানান, উৎসব মানে শুধু পুজোর প্যান্ডেল বা প্রতিমা দেখা নয়। প্রচুর মানুষের রুজিরোজগার জড়িয়ে রয়েছে পুজোর সঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রীর ‘উৎসবে ফিরুন’ মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। সেই প্রসঙ্গে রচনা বলেন, ‘‘আমি পশ্চিমবঙ্গের মানুষ এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য হিসাবে মনে করি, দিদি (মমতা) যা বলেন, চিন্তাভাবনা করেই বলেন। পুজো নিশ্চয়ই হওয়া দরকার। শুধু আনন্দ নয়, প্রচুর মানুষের ব্যথাবেদনা, শ্রম জড়িয়ে থাকে পুজোর সঙ্গে। যাঁরা মণ্ডপ নির্মাণ করেন, তাঁরা কত শ্রম দিয়ে সেই কাজ করেন! উৎসব এলে অনেক মানুষের রুজিরোজগার হয়। সংসার চলে। সেটা ভুলে গেলে হবে না।’’
শুক্রবার থেকে চুঁচুড়া মাঠে শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে ৩৯তম শারদীয়া তাঁত বস্ত্র মেলা। সেই মেলার উদ্বোধন করেন রচনা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিধায়ক অসীমা পাত্র, অসিত মজুমদার, জেলাশাসক মুক্তা আর্য প্রমুখ। মেলা ঘুরে শাড়ি, ব্যাগ, সালোয়ার-কামিজ, গামছা ইত্যাদি কেনেন ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ রচনা।