মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিতেই উচ্ছেদ অভিযান শুরু করার তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে নদিয়া জেলা প্রশাসন ও পুরসভাগুলি। আজ, শনিবার থেকেই কৃষ্ণনগর শহরে রাস্তার পাশ থেকে দোকান ও ঝুপড়ি সরানোর কাজ শুরু হবে। নদিয়া জেলাশাসক এস অরুণপ্রসাদ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। সেই মতো পুরসভাগুলি পদক্ষেপ করছে। মহকুমাশাসকদের পুনর্বাসনের জমি শনাক্ত করতে বলা হয়েছে।”
শুক্রবার বিকেলে সদর মহকুমাশাসকের উপস্থিতিতে তাঁর দফতরে পুরপ্রধান, পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে উচ্ছেদ প্রক্রিয়ার রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী প্রদক্ষেপও শুরু হয়েছে। শুধু কৃষ্ণনগর পুর এলাকাতেই নয়, জেলার বাকি সব পুরসভাতেও উচ্ছেদের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, জেলার ১২টি পুরসভায় একসঙ্গে অভিযান শুরু না করা হলেও ব্যবসায়ীদের সরে যেতে বলে মাইকে প্রচার চালানো হচ্ছে। প্রায় প্রতিটি পুরসভাই এই কাজ শুরু করে দিয়েছে। জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন, প্রথমে মাইকে প্রচার করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হবে। তার পরেও যাঁরা সরবেন না, তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হবে। প্রথমে রাস্তা ও ফুটপাত জুড়ে বসা হকারদের সরানো হবে। যাঁদের দোকান থাকা সত্বেও রাস্তা ও ফুটপাতে পসরা সাজিয়ে ব্যবসা করছেন, তাঁদেরও নিজের জায়গায় ফিরে যেতে বলা হবে। কথা না শুনলে অভিযান চালানো হবে। যাঁরা ফাঁকা জায়গায় সরকারি জমিতে বসে আছেন তাঁদের ক্ষেত্রে পরে পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
মুখ্যমন্ত্রী যে দিন নির্দেশ দেন, সেই রাত থেকেই কৃষ্ণনগরের রাস্তা ও ফুটপাত থেকে উঠে যাওয়ার জন্য মাইক প্রচার শুরু করেছিল পুরসভা। তার জন্য শুক্রবার, ২৮ জুন রাত পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়সীমা শেষে আজ, শনিবার থেকে অভিযান শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার নতুন করে নির্দেশ দেওয়ার পর তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। ঝাউতলা মোড় থেকে সিদ্ধেশ্বরী কালীবাড়ি, পোস্ট অফিস মোড় থেকে সদর মোড়, পুলিশ লাইন থেকে কারবালা মাঠ, ঝাউতলা মোড় থেকে আমিনবাজার, নেদেরপাড়া মোড় থেকে সিএমএস স্কুল, নেদেরপাড়া মোড় থেকে গৌড়ীয় মঠ, ক্ষৌণীশ পার্ক থেকে বেলেডাঙা মোড়, এভি স্কুল মোড় থেকে নেদেরপাড়া মোড়, সদর মোড় থেকে প্রশাসনিক ভবন হয়ে জেলা পরিষদ— এই ভাবে শহরের রাস্তাগুলিকে বিভিন্ন ইউনিটে ভাগ করা হয়েছে। ইউনিট ধরে পর পর অভিযান চালানো হবে।
এই অভিযানে উপস্থিত থাকবেন কৃষ্ণনগর সদর মহকুমাশাসক, পুরপ্রধান, পুলিশ অধিকারিক ও পূর্ত দফতরের লোকজন। পুরপ্রধান রিতা দাস বলেন, “আমরা অনেক আগে থেকেই মাইক প্রচার করেছি। তার পরেও যাঁরা সরেননি তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হবে।” সদর মহকুমাশাসক শারদ্বতী চৌধুরী বলেন, “জেলা পরিষদের সামনে থেকে অভিযান শুরু হবে। সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনা করে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।”
তবে জেলার বেশ কয়েকটি পুরসভায় বিষয়টি একেবারেই প্রাথমিক অবস্থায় রয়েছে। যেমন শান্তিপুর পুরসভা এখনও পর্যন্ত মাইকে প্রচার বা মহকুমাশাসকের সঙ্গে আলোচনাই করে উঠতে পারেনি। পুরপ্রধান সুব্রত ঘোষের আশ্বাস, “যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাজ শুরু হবে।” রানাঘাটের পুরপ্রধান কোশলদেব চট্টোপাধ্যায় আবার বলেন, “আমরা বুধবার থেকেই প্রচার শুরু করে দিয়েছি। ব্যবসায়ীরা অনেকে নিজেরাই সরে গিয়েছেন। তবে প্রয়োজন হলে অভিযান হবে।”