যুক্ত ছিলেন ভেঙে পড়া বাড়ির নির্মাণকাজে, মৃত্যু সেই নাসিমউদ্দিনেরও। — গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার বাড়িতে রয়েছেন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী। তিন সন্তান, ছোট ভাই এবং বৃদ্ধ মা, বাবাকে নিয়ে সংসারের পুরো দায়িত্ব ছিল নাসিমউদ্দিন শেখের উপর। রাজমিস্ত্রির কাজ করে কোনও রকমে সংসার চালাচ্ছিলেন যুবক। রবিবার রাতে কলকাতার গার্ডেনরিচে যে বহুতল নির্মাণের সঙ্গে নাসিমউদ্দিন যুক্ত ছিলেন, সেটি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। ঘুমন্ত অবস্থায় তার নীচে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হন নাসিম। পরে এসএসকেএমে তাঁর মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার তাঁর দেহ পৌঁছল ভগবানগোলা থানার ছক্কননগর গ্রামে।
ভগবানগোলা থানার মহিষাস্থলি গ্রাম পঞ্চায়েতের ছক্কননগর গ্রামের বাসিন্দা নাসিমউদ্দিন গত কয়েক বছর ধরেই কলকাতায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। দিন কুড়ি আগেই গার্ডেনরিচের ওই বহুতল নির্মাণের কাজ করার জন্য তিনি কলকাতা যান। থাকছিলেন নির্মীয়মান বাড়িতেই। রবিবার রাতে আচমকাই ধসে পড়ে নির্মীয়মান বাড়িটিই। তার তলায় চাপা পড়ে যান নাসিমরা। উদ্ধারকারীরা গুরুতর আহত অবস্থায় নাসিমকে উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই মৃত্যু হয় নাসিমের।
গ্রামে কাজ করে যে টাকা পাওয়া যায়, তাতে সংসার চলে না। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়েই রাজমিস্ত্রির কাজ নিয়ে বাইরে যেতে হয় নাসিমদের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফিরল তাঁর নিথর দেহ। বাড়িতে স্বামীর অপেক্ষায় ঠাঁয় বসে গর্ভবতী স্ত্রী। নাসিমের মৃত্যুর খবর শুনে জেসমিনা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বারে বারে। কোনও রকমে কেবল বললেন, ‘‘গর্ভে সন্তান, বাড়িতে বৃদ্ধ মা, বাবা। কী করব ভেবে উঠতে পারছি না। সরকার আমাদের পাশে দাঁড়াবে না?’’ তিন সন্তান, বৃদ্ধ শ্বশুর, শাশুড়িকে নিয়ে সংসার কী করে চালাবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না অন্তঃসত্ত্বা জেসমিনা।