প্রতীকী ছবি।
পড়শি রাজ্য অসমে চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জি প্রকাশ হতেই তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছিল মুর্শিদাবাদে। নথি জোগাড় করতে না পেরে এনআরসি আতঙ্কে ডোমকল, হরিহরপাড়া, বহরমপুরে একের এক আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
অন্য দিকে রেশন কার্ডের জন্য বিডিও অফিসে বা আধার কার্ড সংশোধনের জন্য রাতভর জেগে বিভিন্ন ডাকঘরে লম্বা লাইনও এখন জেলার মানুষের কাছে চেনা ছবি। ভোটার তালিকা নাম তোলা বা সংশোধনের ক্ষেত্রেও সেই পরিচিত ভিড়ই ফিরে এল শহরে-গঞ্জে। বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলায় ভোটার তালিকায় নাম তোলা কিংবা সংশোধনে তাই রাজ্যের শীর্ষে রয়েছে দখল করেছে। গত ১৬ ডিসেম্বর বুথে বুথে ভোটার তালিকার কাজ শুরু হয়েছিল। ১৫ জানুয়ারি সেই কাজ শেষ হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে রাজ্যে প্রায় ৮০ লক্ষ ভোটার তালিকায় নাম তোলা, সংশোধনের আবেদন করেছেন। তার মধ্যে মুর্শিদাবাদের প্রায় সাড়ে ১২ লক্ষ আবেদন জমা পড়েছে। মুর্শিদাবাদের পরে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগণা। তৃতীয় স্থানে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা।
জেলায় প্রায় সাড়ে ১২ লক্ষ আবেদনের মধ্যে ৯ লক্ষ ৬৭ হাজার শুধুমাত্র সংশোধনের জন্য আবেদন করেছেন। ২ লক্ষ ৬৫ হাজার নতুন ভোটার তালিকায় নাম তোলার আবেদন। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, এনআরসি আতঙ্কে জন্মের শংসাপত্র থেকে শুরু করে আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, জমির কাগজপত্র-সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় নথি সংশোধনের জন্য সরকারি অফিসগুলিতে ভিড় জমাচ্ছেন। তেমনই ভোটার তালিকার কাজ চলাকালীনও বাসিন্দারা সংশোধনের জন্য আবেদন করেছেন।
হরিহরপাড়ার হামদিরপাড়ার আমিনুদ্দিন শেখ বলছেন, ‘‘আমরা তো নাম ঠিকানা ঠিকই দিয়েছিলাম। কিন্তু সরকারি লোকজন নথিতে ভুল করে দেন। যার খেসারত দিতে ভোটার কার্ড থেকে আধার কার্ড সংশোধন করার জন্য আমাদের ছুটে বেড়াতে হচ্ছে।’’ ডোমকলের মারুফ হোসেন বলছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার এনআরসি করে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেবে বলছে। আমরা সংবাদ মাধ্যমে দেখেছি নথি ঠিক না থাকায় অসমে এনআরসিতে অনেকের নাম ওঠেনি। তাই নথি ঠিক করতে চরকির মতো ঘুরছি।’’ তবে জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলছেন, ‘‘জেলাজুড়ে গত একমাস ধরে ভোটার তালিকার কাজ হয়েছে। আবেদনের অধিকাংশই সংশোধনের জন্য। নির্ভুল ভোটার তালিকা করতে আমরা যাবতীয় ব্যবস্থা নিয়েছি।’’