পুলিশ জেলা হিসেবে মুর্শিদাবাদের বিভাজন হল কিন্তু জেলার অপরাধপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত ডোমকল থানার ভাগ হল না।
ফলে এই থানা থেকে দূরের একলা জিৎপুর, বাঘডাঙা, গড়াইমারির মানুষকে একটা জিডি করতে হলেও গোটা দিন কামাই করে আসতে হয় ডোমকল মহকুমা সদরে। এমনকি খুন জখম প্রায় নিত্য ঘটনা যেখানে সেই বাঘডাঙ, কুশাবাড়িয়া, বক্সিপুরেও কোনও পুলিশ ফাঁড়ি হ না। ফলে ডোমকল থেকে কোথাও ৩০ কিমি কোথাও বা ২৫ কিমি দূরের মানুষকে অনেক কষ্ট করেই পৌঁছতে হয় ডোমকল থানায়। জেলা পুলিশের কর্তারা বলছেন, ‘‘ডোমকলকে ভাগ করার জন্য আমরা সরকারের কাছে অনেক আবেদন জানিয়েছি, বাঘডাঙা এলাকায় একটি পৃথক থানার জন্য প্রস্তাবও সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সাড়া মেলেনি।’’
নদিয়ার সীমান্ত গরিবপুর থেকে একেবারে ভারতীয় সীমান্তের গ্রাম নটিয়াল পর্যন্ত বিস্তৃত থানা এলাকা। প্রায় ৩০৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ডোমকল থানা, এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তের দুরত্ব প্রায় ৫৫ কিমি। তিন লক্ষ ছাড়িয়েছে জনসংখ্যা। এই থানা জুড়ে আছে ডোমকল বিধানসভা। রাজনৈতিক হিংসা প্রবণ ও সীমান্ত এলাকার থানা হওয়ার ফলে অপরাধ প্রবণতাও অন্যান্য থানার থেকে অনেক বেশি। কথায় কথায় খুন জখমের ঘটনা প্রায় লেগেই থাকে ডোমকল থানায়। কিন্তু এখনও সেই থানায় আইসি-সহ ১৮ জন অফিসার। মেরেকেটে গোটা পঁচিশেক কনস্টেবল হোমগার্ড, ১৩ জন গ্রামীণ পুলিশ আর ৩০৫ জন সিভিক ভলান্টিয়ার।
বাম আমলে পড়শি নদিয়া জেলার করিমপুর থানা ভাগ হল চার ভাগে। ডোমকল থেকে গেল সেই ডোমকলেই। তৎকালীন বাম সরকারের মন্ত্রী তথা ডোমকলের বিধায়ক সিপিএমের আনিসুর রহমান বলছেন, ‘‘আমরা সেই সময় থেকেই ডোমকল থানাকে দু’টো ভাগ করার জন্য তৎপরতা শুরু করেছিলাম। কিন্তু করতে পারিনি, ডোমকলকে কম করে দু’ভাগে ভাগ করা খুব জরুরি। এতে যেমন এক দিকে পুলিশের কাজের সুবিধা হবে, সাধারণ মানুষও উপকৃত হবেন।’’ থানা নিয়ে অন্তত একই সুর তৃণমূল নেতাদেরও। ডোমকলের পুরপ্রধান তৃণমূলের জাফিকুল ইসলাম বলছেন, ‘‘সরকার ইতিমধ্যেই পুলিশ জেলা ভাগ করে জেলার মানুষকে স্বস্তি দিয়েছে। আশা করছি আগামী দিনে ডোমকল থানাও ভাগ হবে, প্রয়োজনে আমরা সরকারের কাছে বিষয়টি নিয়ে আবেদন রাখব।’’