—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মাধ্যমিকে প্রথম দশে ৫৭ জনের মধ্যে এক জনও নেই মুর্শিদাবাদের। কেবল আমিনুল ইসলাম ফরাক্কার ছেলে, সে নবম হয়েছে কিন্তু পড়ে মালদহে। পাশের হার ৭৯.২৫। যা বেশ ভাল। কিন্তু জেলা জুড়ে আর কেউ মেধা তালিকায় আসতে পারেনি। এই ব্যর্থতার দায়, শিক্ষকদের মতে, সরকারি স্কুলগুলির পরিকাঠামোর অভাব, লাগামছাড়া ছুটি ও বিষয় ভিত্তিক শিক্ষকের অভাব। আপাতত শিক্ষা দফতরের যা পরিস্থিতি তাতে সঙ্কট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে শুধু সরকারের উপর নির্ভরশীলতা নয়, আন্তরিক ভাবে এগিয়ে আসতে হবে শিক্ষকদেরও।
এবিটিএ-র জেলা সভাপতি জুলফিকার আলি বলছেন, “সরকারি স্কুলগুলির উপর ভরসা কমেছে। যারা একটু স্বচ্ছল পরিবারের তারা চলে যাচ্ছে বেসরকারি বিভিন্ন মিশন স্কুলে। কোভিডের পর থেকেই বেশির ভাগ স্কুলেই শিক্ষক সংখ্যা কমেছে। তারপরেও ঢালাও ভাবে বদলির সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ফলে মার খেয়েছে বিশেষ করে বিজ্ঞান শাখা। তার উপর যে কোনও ছুতোনাতায় স্কুলগুলিতে ছুটি দেওয়ার প্রবণতা খুব বেশি। ফলে কার্যদিবস কমেছে অনেকটাই। সিলেবাস শেষ হচ্ছে না। মুর্শিদাবাদে ছাত্রছাত্রীদের বেসরকারি মিশন স্কুলগুলিতে যাওয়ার আগ্রহ বেড়েছে। এটা তারই প্রভাব। গ্রামের স্কুলগুলিতে বিজ্ঞান শাখা চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।”
তৃণমূলের মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির উত্তর মুর্শিদাবাদের জেলা সভাপতি আসরাফ রিজভি অবশ্য এখনই সরকারি স্কুলের পরিস্থিতির এতটা সঙ্কটজনক অবস্থা মানতে রাজি নন। তিনি বলেন, “তা হলে অন্য জেলা থেকে এত কৃতী বেরোচ্ছে কী করে? ছুটি ও শিক্ষক নিয়ে যে সমস্যা সেটা তো গোটা রাজ্যেই রয়েছে। তা হলে সেখানে কৃতী ছাত্র বেরোচ্ছে কী করে? এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যাবে বলে আমার মনে হয়। র্যাঙ্ক তো গত বছরও ছিল। আবার আসছে বছর হয়তো ভাল ফল হবে। এখনই হতাশ হতে রাজি নই আমি।”
প্রধান শিক্ষক ফোরামের রাজ্য সহ সভাপতি বিরাট বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কৃতী তালিকায় মুর্শিদাবাদের না থাকাটা দুর্ভাগ্যজনক। এমনিতেই এ জেলা শিক্ষায় কিছুটা পিছিয়ে। তার উপর শিক্ষক কম। শিক্ষকদের থেকে স্কুল ছুটি দেওয়ার আগ্রহ সরকারের যেন বেশি। অন্য জেলা আর্থিক ভাবে কিছুটা স্বচ্ছল। সেখানে কোচিং, টিউশনের প্রবণতা বেশি। একটি স্কুলের পরিকাঠামো মানেই ইট কাঠের ভবন নয়। ১০ হাজার ছাত্র, সেখানে শিক্ষক নেই বিজ্ঞান বিষয়ে। তবে এ জেলা থেকে অনেকেরই কলকাতার নামী স্কুলে পড়ার প্রবণতা বেড়েছে। অলিতে গলিতে বেসরকারি স্কুল। মিডডে মিল, সাইকেল দিয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়লেও মানে বাড়বে না।” অরঙ্গাবাদ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল লাহিল কাফি বলছেন, “উচ্চ মাধ্যমিক ও হাই মাদ্রাসা নিয়ে আশা রয়েছে।’’