জামাইষষ্ঠীতে শ্বশুরবাড়ি এসে শাশুড়ির ছোড়া ইটে গুরুতর জখম হলেন জামাই। নিজস্ব চিত্র।
ধুলোয় লুটোপুটি খাচ্ছে চওড়া পাড়ের শান্তিপুরী তাঁতের শাড়ি। পাকা আম ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে উঠোনে। জামাইও গড়াগড়ি খাচ্ছেন মাটিতে! জামাইষষ্ঠীতে শ্বশুরবাড়ি এসে শাশুড়ির ছোড়া ইটে গুরুতর জখম হলেন জামাই। বৃহস্পতিবার নদিয়ার শান্তিপুরের ঘটনা। অনুপকুমার মজুমদার নামে ওই যুবককে আহত অবস্থায় শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নদিয়ার হবিবপুরের বাসিন্দা অনুপের সঙ্গে দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে স্ত্রীর কোনও যোগাযোগ নেই। তাঁরা একসঙ্গে থাকেনও না। স্ত্রী বাপেরবাড়িতেই থাকেন। বৃহস্পতিবার জামাইষষ্ঠীর দিনে আচমকাই সেই বাড়িতে হাজির হন অনুপ। সঙ্গে নিয়ে আসেন শাশুড়ির জন্য শাড়ি, বাড়ির লোকেদের জন্য আম, কাঁঠাল, দই, মিষ্টি। পড়শিদের দাবি, স্বামীর আসার খবর পেয়েই বাড়ি ছেড়ে চলে যান স্ত্রী। শাশু়ড়িও দরজায় তালা লাগিয়ে দেন। এই পরিস্থিতিতে বাড়ির সামনে আসন পেতে বসে পড়েন অনুপ। অনেক ডাকাডাকির পর দরজা খোলেন শাশুড়ি। অনুপও এগিয়ে যান প্রণাম করতে। অভিযোগ, তখনই শাশুড়ি তাঁকে ইট ছুড়ে মারেন। ওই অবস্থায় নিজের ছেলেকে জড়িয়ে ধরতে গেলে শ্যালক তাঁর মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে তা ভেঙে দেয় বলেও অভিযোগ।
অনুপের অভিযোগ, তাঁর স্ত্রী বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত। আইনের দ্বারস্থ হয়ে তাঁর কাছ থেকে খোরপোশ বাবদ বেশ কিছু টাকাও নিয়েছেন। গাড়িটিও রেখে দিয়েছেন নিজের কাছে। অনুপের দাবি, পাঁচ বছর ধরে বছর সাতেকের সন্তানের সঙ্গেও তাঁকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘লোকের বাড়ি বাড়ি গ্যাস দেওয়ার কাজ করতাম আমি। কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে বউকে ম্যানেজমেন্ট এবং এমএ পাশ করাই। আমার সুপারিশে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে ওঁর চাকরি হয়। সেখানেও পরকিয়াতে জড়িয়ে পড়ে স্ত্রী। তখন থেকেই আমাদের সম্পর্কে টানাপড়েন চলছে।’’ অনুপের বক্তব্য, খোরপোশ বাবদ এক লক্ষ টাকা নেওয়ার পরেও স্ত্রীর কারণে আইনি সমস্যায় জর্জরিত তিনি। তা থেকে মুক্তি পেতেই স্ত্রীর বাড়িতে ধর্না বলে জানান যুবক। এ ব্যাপারে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি অভিযুক্ত শাশুড়ি ও শ্যালক।