জখম সঞ্জিত রায়। নিজস্ব চিত্র
স্ত্রীকে নওদা পঞ্চায়েত কার্যালয়ে নামিয়ে দেওয়ার পরেই সঞ্জিত রায়ের ফোন আসে মোবাইলে। ফোন পেয়ে তিনি সেখানে দাঁড়াননি। মোটরবাইক চালিয়ে রওনা দেন। তিনি যখন নওদা থানার ১৫ মাইলের কাছে রঘুনাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এসে পৌঁছন, ঠিক তখনই রাজ্য সড়কের উপরে আচমকা পিছন দিক থেকে দুটি মোটরবাইকে পাঁচ জন দুষ্কৃতী এসে খুব কাছ থেকে চার রাউন্ড গুলি চালায় বলে অভিযোগ। এর পরেই রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন তৃণমূলের কর্মী সঞ্জিত। পরে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে থেকে তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখান থেকে তাঁকে রেফার করে দেওয়া হয়েছে কলকাতার সরকারি হাসপাতালে। ওই ঘটনা প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ‘‘পুলিশ গুলি চালানোর ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। দোষীদের গ্রেফতার করা হবে।’’ তবে খুনের চেষ্টার কোনও কারণ এখনও পুলিশের কাছে স্পষ্ট নয়। পুলিশ সঞ্জিতের মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড খতিয়ে দেখছে বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সঞ্জিতের স্ত্রী নওদা পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান রিঙ্কি রায়। তাঁকে পঞ্চায়েত কার্যালয়ে নামিয়ে মোটরবাইক নিয়ে ফেরার পথে ওই ঘটনা ঘটে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, যে দু’টি মোটরবাইক চালিয়ে দুষ্কৃতীরা এসেছিল, তা নম্বর-প্লেটহীন ছিল এবং দুষ্কৃতীদের মাথায় হেলমেট ছিল। তার মধ্যে একটি মোটরবাইকে দু’জন ছিল, অন্য একটি মোটরবাইকে ছিল তিন জন। দুষ্কৃতীরা প্রথমে পিছন দিক থেকে গুলি চালায়। সেই গুলি লাগে সঞ্জিতের হাতে। তখনই মোটরবাইক থেকে ছিটকে পড়ন তিনি। পরে মোটরবাইক থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়লে দুষ্কৃতীরা খুব কাছ থেকে গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ জানায়, পেটে দুটো এবং ডান কানের পাশে একটি গুলি লেগেছে এবং ডান হাতে একটা গুলি লাগে। রিঙ্কি রায় বলেন, ‘‘আমাকে পঞ্চায়েতে নামিয়ে একটা ফোন পেয়ে দ্রুত বেরিয়ে এসেছিল। কেন এমন হল বুঝতে পারছি না।’’
কংগ্রেসের নওদা ব্লক সভাপতি সুনীল মণ্ডল বলেন, ‘‘তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই এই ঘটনা।’’ তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ও জেল পরিষদের সভাধিপতি মোসারফ হোসেন বলেন, ‘‘গুলি চালানোর ঘটনার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। দলীয় স্তরে তার কারণ খোঁজা হবে।’’