পজ়িটিভ আরও ১৪ জন
Coronavirus

‘যে আসবে সে স্কুলেই থাকবে’

জেলার যে কয়েক হাজার শ্রমিক এখনও ফেরত আসতে পারেননি তাঁদের মধ্যে একটা বড় অংশই মহারাষ্ট্রে রয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২০ ০৪:৫১
Share:

ছবি এএফপি।

দু’দিনে ২৬ জন। জেলায় লাফিয়ে বাড়ছে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা। বৃহস্পতিবারও জেলায় নতুন করে ১৪ জন করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। অধিকাংশই পরিযায়ী শ্রমিক এবং মহারাষ্ট্র থেকে ফিরেছেন।

Advertisement

জেলার যে কয়েক হাজার শ্রমিক এখনও ফেরত আসতে পারেননি তাঁদের মধ্যে একটা বড় অংশই মহারাষ্ট্রে রয়েছেন। ট্রেন ও বাস চালু হয়ে গেলে তাঁরা ফিরতে থাকবেন এবং তখনই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের সামনে পড়বে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর। সেই সূত্র ধরেই বৃহস্পতিবার কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র তাঁর ফেসবুকে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে বলেন, ‘‘আগামী দিনে পরিযায়ী মানুষ ফেরার জন্য আমাদের জেলায় কেস খুব তাড়াতাড়ি বাড়বে। যে আসবে সে স্কুলেই থাকবে।’’ তাঁর আরও বার্তা ছিল, ‘‘আজ ট্রেন আসছে কৃষ্ণনগরে। প্রত্যেক ব্লক ও জিপিতে স্কুলে তাঁদের রাখা হবে। একটা মানুষও বাড়ি যাবেন না।’’

যদিও কেরল থেকে আসা সেই বিশেষ ট্রেন শেষ মূহুর্তে সিদ্ধান্ত বদল হওয়ায় কৃষ্ণনগরে ঢোকেনি। উত্তরবঙ্গে চলে গিয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ট্রেনে প্রায় ৭০ জন নদিয়ার শ্রমিক আছেন। জেলা শাসক বিভু গোয়েলের কথায়, “জেলায় করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সমস্ত রকম প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’ তবে সাধারণ মানুষের সহযোগিতা ছাড়া কোনও ব্যবস্থা সফল হতে পারে না, সে কথা বলেছেন মহুয়া।

Advertisement

ফেসবুক ভিডিওয় তৃণমূল সাংসদের বক্তব্য, ‘‘৬০ হাজার লোক ফিরবে। এটা সরকার একা সামলাতে পারে না। আপনাদেরও সহযোগিতা করতে হবে। যাঁরা বাড়ি আছেন, আমরা বলছি স্কুলে আসতে। কিন্তু তাঁরা আসছেন না, আশাদিদিদের সঙ্গে ঝগড়া করছেন। সকালে খবর এল,জয়রামপুরে যাঁরা স্কুলে রয়েছেন তাঁরা বাইরে বেরিয়ে চা খাচ্ছেন। এগুলো করলে অসম্ভব হয়ে যাবে। আমরা সবাই মারা যাব।’’

পলাশিপাড়ার পলশুন্ডার বাসিন্দা কিছু দিন আগে কোয়রান্টিন সেন্টার থেকে পালানোর চেষ্টা করেন। তিনি মহারাষ্ট্র থেকে ফিরেছিলেন। তাঁর রিপোর্টও এ দিন পজিটিভ এসেছে। এ কথা উল্লেখ করে এ দিন সাংসদের মন্তব্য, ‘‘যাঁরা এ সব করছেন তাঁরা যে কী সংক্রমণ ছড়াচ্ছেন আপনারা এ বার বুঝুন! আগামী দিনে কেউ যেন এ সব কাজে প্ররোচনা না দেন।’’

নদিয়া জেলায় লকডাউনের পর এখনও পর্যন্ত প্রায় ২৭ হাজার মানুষ ফিরেছেন। তাঁদের মধ্যে ৬২৩৪ জনের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। রিপোর্ট এসেছে ২০৯৩ জনের। এর মধ্যে ৫২ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “এই ৬২৩৪ জনের মধ্যে প্রায় সাড়ে চার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক আছেন। যাঁদের রিপোর্ট পজিটিভ তাঁদের মধ্যে ৩৫ জন পরিযায়ী শ্রমিক।’’

হাঁসখালি থানার বেনালী-নতুন গ্রামে হোম কোয়রান্টিনে থাকা এক পরিযায়ী শ্রমিককের রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে। তেহট্টের দত্তপাড়ার ব্লকে বুধবার দুই করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলেছিল। এক জন পুনে ফেরত পরিযায়ী শ্রমিক। বাড়ি বেতাই সাধু বাজারে। অন্য জন এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলা। তেহট্টের কৃষ্ণচন্দ্রপুরে তাঁর শ্বশুরবাড়ি। বৃহস্পতিবার তেহট্ট মহকুমায় আরও ৩ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। এ দিন শান্তিপুরেও এক জনের করোনা ধরা পড়েছে। শান্তিপুর ব্লকের গয়েশপুরের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি ১৭ মে ভিন রাজ্য থেকে ফেরেন। কৃষ্ণগর কোয়রান্টিন সেন্টারে থাকার পরে ২১ মে তাঁর লালারস পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় তেহট্টে। ২২ তারিখ তিনি শান্তিপুর ব্লকে আসেন। তার পর হোম কোয়রান্টিনে ছিলেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement