Unnatural death

হোটেলে যুবকের বিবস্ত্র দেহ উদ্ধার, অনুমান খুন, প্রতিবাদে স্থানীয়দের জাতীয় সড়ক অবরোধ, ভাঙচুর

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, হোটেল সংলগ্ন এলাকায় একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলেও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তায় পাশাপাশি দু’টি হোটেলে দীর্ঘ দিন দেহব্যবসা ও মাদক কারবারিদের অবাধ যাতায়াত চলছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

ধুবুলিয়া শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:১২
Share:

জাতীয় সড়ক সংলগ্ন হোটেলে ভাঙচুর স্থানীয়দের। — নিজস্ব চিত্র।

১২ নম্বর জাতীয় সড়কের কৃষ্ণনগরগামী লেনের ঠিক পাশে নদিয়ার ধুবুলিয়ার সিংহাটিতে হোটেল থেকে উদ্ধার হল যুবকের বিবস্ত্র দেহ। মৃত যুবকের নাম কল্লোল সরকার (৪৩)। বাড়ি নদিয়ার কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানা এলাকার নাজিরা পাড়ায়। স্থানীয়েরা হোটেলে মধুচক্র এবং অসাধুচক্র চালানোর অভিযোগে দীর্ঘ ক্ষণ জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। ভাঙচুর চালানো হয় হোটেলে। পুলিশের সঙ্গেও খণ্ডযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন স্থানীয়েরা। প্রাথমিক ভাবে, ওই যুবককে খুন করা হয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, নদিয়ার কৃষ্ণনগরের কোতোয়ালি থানা এলাকার বাসিন্দা কল্লোল সম্প্রতি ব্যবসায় লোকসানের মুখে পড়েছিলেন। বাজারে ধারও ছিল। পাওনাদারদের সঙ্গে মাঝেমধ্যেই এ নিয়ে গোলমাল বাধত কল্লোলের। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, শুধু ব্যবসায়িক ক্ষতি নয়, একাধিক মহিলার সঙ্গেও বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন মৃত যুবক। বৃহস্পতিবার বিকেলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন কল্লোল। তার পর থেকে আর খোঁজ মেলেনি তাঁর। শুক্রবার সকালে মৃত্যুর খবর পৌঁছয় বাড়িতে। মৃত যুবকের আত্মীয় আশিস সরকার বলেন, ‘‘ব্যবসায়িক কারণেই কল্লোল মাঝেমধ্যে ওখানে যেত। দেহে কোনও পোশাক ছিল না। সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন, এখান থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে, এটা পরিকল্পিত খুন। এই খুনের সঙ্গে হোটেল মালিকের কোনও যোগ রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখুক পুলিশ। হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখলেই বিষয়টি পরিষ্কার হবে।’’

হোটেল সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক মহিলাকে সঙ্গে নিয়ে হোটেলে আসেন কল্লোল। ওই হোটেলে মাঝেমধ্যেই যাতায়াত থাকায় কল্লোলের সঙ্গে আসা মহিলার পরিচয়পত্র নিয়ে খুব একটা কড়াকড়ি করেননি হোটেলকর্মীরা। শুক্রবার সকালে বাথরুম পরিষ্কার করতে গিয়ে হোটেলকর্মীরা দেখেন, রক্তাক্ত এবং বিবস্ত্র অবস্থায় যুবকের দেহ বাথরুমের মেঝেতে লুটিয়ে। তড়িঘড়ি উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় ধুবুলিয়া গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ওই যুবকের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে জানা গিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই হোটেলের এক কর্মী জানান, হোটেলে দেহব্যবসা চলে। এ ছাড়াও মাদক কারবারিদেরও যাতায়াত রয়েছে ওই হোটেলে। পুলিশ নিয়মিত হোটেল মালিকের কাছ থেকে টাকা নেয় বলেও দাবি তাঁর।

Advertisement

দেহ আটকে রেখে দীর্ঘ ক্ষণ জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, হোটেল সংলগ্ন এলাকায় একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলেও পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় পাশাপাশি দু’টি হোটেলে দীর্ঘ দিন ধরে দেহব্যবসা ও মাদক কারবারিদের অবাধ যাতায়াত চলছে। স্থানীয় থানা, পুলিশ সুপার এমনকি জেলাশাসককে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন এক কর্তার মালিকানাধীন হওয়ায় এই হোটেলে চলা অনিয়ম নিয়েও খুব একটা উচ্চবাচ্য করে না পুলিশ। প্রতিবাদ করতে গেলে পাল্টা কেসে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয় হোটেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে, এমনটাও অভিযোগ স্থানীয়দের একাংশের। দীর্ঘ ক্ষণ জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ করে রাখার পর পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের আলোচনায় সাময়িক ভাবে হোটেল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিক্ষোভ উঠে গেলে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায় পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement