খোলা মাঠে খাওয়া। নিজস্ব চিত্র
বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে খোলা আকাশের নীচে মিডডে মিল খাচ্ছে পড়ুয়ারা। শেষ পাতে পায়েস চেটেপুটে খাচ্ছে তারা। সেই সময় পড়ুয়াদের খাবার থালার কাছে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যাচ্ছে একটি সারমেয়কে। হরিহরপাড়ার নিশ্চিন্তপুর উচ্চবিদ্যালয়ের অব্যবস্থার ওই ছবি মোবাইল ফোনে ক্যামেরাবন্দি করে ব্লকের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে তৈরি একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পোস্ট করেন বিদ্যালয়েরই এক সহ শিক্ষক। ওই ছবি নজরে পড়তেই নড়েচড়ে বসেছেন ব্লক প্রশাসনের কর্তারা।
পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে হরিহরপাড়ার এক যুগ্ম সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক আমোস তামাংকে ওই বিদ্যালয়ে পাঠান সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক রাজা ভৌমিক। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুলের প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে ২০১৯ সালে পড়ুয়াদের জন্য বসে খাওয়ার জন্য ঘর তৈরি করতে প্রায় চার লক্ষ ৯২ হাজার টাকা বরাদ্দ করেছে প্রশাসন। ওই টাকা বিদ্যালয়ের তহবিলে যোগও হয়েছে সেই সময়।
অভিযোগ তার পর প্রায় তিন বছরের বেশি সময় অতিক্রান্ত হলেও খাবার ঘর তৈরির উদ্যোগ নেয়নি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ছাত্রছাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের নীচতলায় একাধিক ঘর ফাঁকা থাকলেও মাঠের মধ্যে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিডডে মিল খেতে দেওয়া হয়।
যদিও ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুব্রত রায় বলেন, ‘‘ফাঁকা জায়গায় খাওয়ানো হয়েছে এটা ঠিক। তবে সেখানে স্কুলের বদনাম করতেই কোনও শিক্ষক কুকুর সহ ছবি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দিয়েছে। আমরা বিষয়টি নিজেদের মতো করে দেখছি।’’
বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, ‘‘তিন বছরের বেশি সময় আগে টাকা পেলেও মিডডে মিল খাওয়ার ঘর তৈরিতে উদ্যোগী হননি প্রধান শিক্ষক। একাধিক ঘর ফাঁকা থাকলেও সেখানে না খাইয়ে খোলা মাঠে মিডডে মিল খাওয়ানো হয়। এটা মেনে নেওয়া কষ্টকর।’’
হরিহরপাড়ার বিডিও রাজা ভৌমিক বলেন, ‘‘বিষয়টি জানতে পেরেই তদন্তের জন্য যুগ্ম বিডিওকে ওই বিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছিল। টাকা স্কুলের তহবিলে দেওয়ার এত দিন পরেও কেন কাজ হয়নি এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কেনো ছাত্রছাত্রীদের খাওয়ানো হচ্ছিল সে বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।’’ প্রধান শিক্ষক সুব্রত রায় বলেন, ‘‘আগামী এক মাসের মধ্যে খাবার ঘর তৈরির উদ্যোগ হবে। যত দিন না সেই কাজ শেষ হচ্ছে তত দিন ফাঁকা শ্রেণিকক্ষে মিডডে মিল খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হবে।’’