প্রতীকী ছবি।
এখনও প্রাণহানি নেই। কিন্তু ডেঙ্গিতে আক্রান্ত-সংখ্যা যথেষ্ট বেশি। সরকারি হিসেবের বাইরেও যে কত রোগী রয়েছে, তারও হিসেব নেই। যদিও স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, লোকে আগের চেয়ে সচেতন হওয়ায় ডাক্তারের কাছে তড়িঘড়ি আসছে। তাই সংখ্যাটা বেশি বলে মনে হচ্ছে। প্রাণহানি হচ্ছে না।
রাজ্যে অন্য নানা এলাকার মতো গত কয়েক বছর ধরেই নদিয়া ও মুর্শিদাবাদেও ডেঙ্গির প্রকোপ অনুভূত হচ্ছে। গত বছর নদিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৬৮০। এ বছর অগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত তা ১১০০ জনে দাঁড়িয়েছিল। ২৩ অক্টোবরে সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৪৫-এ। গত বছর এই দিন পর্যন্ত সংখ্যাটা ছিল ১১৯৮। তবে এই দুই বছরে ডেঙ্গিতে কারও মৃত্যু হয়নি, অন্তত সরকারি হিসেবে।
মুর্শিদাবাদে অবশ্য ডেঙ্গির প্রকোপ তুলনায় কম। এ বছরে এখনও পর্যন্ত ৫৮৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। গত এক মাসে আক্রান্ত ১০২ জন। গত বছর সংখ্যাটা ছিল ১১৩২। গত পাঁচ বছরে ডেঙ্গিতে দু’জন মারা যান ২০১২ সালে। সে বছর কিন্তু সরকারি হিসেবে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪৫২।
নদিয়ায় ডেঙ্গির প্রকোপ সবচেয়ে বেশি হরিণঘাটায়। এ ছাড়া কৃষ্ণনগর ১ ব্লকের কয়া, ভাতজাংলা-কালীপুর, কালীপুর, সুভাষনগর, কৃষ্ণনগর ২-এ আনন্দনগর, ভক্তনগর, হাঁসাডাঙা, চাকদহের আলয়পুর, নবদ্বীপের ইদ্রাকপুর, হরিণঘাটার দিঘলগ্রামের ঘোষপাড়া, নগরউখড়া ২ পঞ্চায়েতের উত্তর ও দক্ষিণ চাঁদাপাড়া, করিমপুর ১ ব্লকে কাঁঠালিয়ায়, হাঁসখালির পিপুল বেড়িয়ায় ভাল রকম প্রকোপ রয়েছে। কল্যাণী ও কৃষ্ণনগর পুর এলাকাতেও জ্বর ছড়িয়েছে। জেলা হাসপাতালে ভিড় বেড়েছে। ভিড় বাড়ছে কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়ালেও।
মুর্শিদাবাদে জেলাসদর বহরমপুর ছা়ড়াও ফরাক্কা, ধুলিয়ান, সমশেরগঞ্জ এলাকায় জ্বরের প্রকোপ বেশি। তবে এর কতটা ডেঙ্গি, তা নিশ্চিত নয়। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিরুপম বিশ্বাসের দাবি, “স্বাস্থ্যকর্মীরা ও পুলিশ-প্রশাসন একযোগে ডেঙ্গির মোকাবিলায় নেমেছেন। যার ফলে গত বছরের তুলনায় এ বার জেলায় ডেঙ্গির প্রকোপ কম।”
স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, মে থেকে দুই জেলাতেই পুরকর্মী ও স্বাস্থ্যকর্মীরা মাসে ৫ দিন বাড়ি-বাড়ি গিয়ে মশার বাসস্থান নষ্ট করছেন। ঠিক হয়েছে, অক্টোবর পর্যন্ত এই কাজ চলবে। তার পরে শীত চলে আসবে, মশার দাপটও কমতে শুরু করবে। জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা কমছে। ফরাক্কার অর্জুনপুর-ভবানীপুর, সুতির ফতুল্লা, গাঙ্গিন, ঝাড়খণ্ড ঘেঁষা সমশেরগঞ্জের জামাই পাইকরে জ্বরের প্রকোপ আছে।
নদিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায়ের মতে, “গত বছরের তুলনায় মানুষ অনেক বেশি সচেতন হয়েছেন। সঠিক সময়ে চিকিৎসকের কাছে আসছেন। পরীক্ষা করাচ্ছেন। সেই কারণেই এ বার ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যাটা বেশি মনে হচ্ছে। তবে সচেতনতা বাড়ার ফলেই এখনও এই জেলায় ডেঙ্গিতে কেউ মারা যাননি।”