বাড়ির এই জানলায় রাখা বোমা ফেটে যায় বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার বেলপুকুরে। নিজস্ব চিত্র
বাড়িতেই বোমার আঘাতে গুরুতর জখম হলেন এক মহিলা। নাম অপর্ণা ঘোষ। বাড়ি ধুবুলিয়া থানার বেলপুকুর এলাকায়।
বুধবার রাতে তাঁর ঘরের ভিতরে বোমা ফাটে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে ধুবুলিয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর সেখান থেকে তাঁকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই রাতেই কলকাতায় এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়।
এই ঘটনায় পুলিশ মহিলার দেওর-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কারা বোমা বা অস্ত্রশস্ত্র এনে এলাকায় মজুত করছে, সেই প্রশ্ন উঠেছে। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার ঈশানী পাল বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্ব দিতে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঠিক কী কারণে এমনটা ঘটল, তা এখনই বলা সম্ভব নয়।”
আহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে খাওয়ার সময়ং অপর্ণা রান্না ঘরে নুন আনতে গিয়েছিলেন। তখনই বোমা ফাটে। সকলে ছুটে গিয়ে দেখেন, অপর্ণা রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে।
অপর্ণার স্বামী কমলের ভাগ্নি সুস্মিতা ঘোষ বলেন, “আমি তখন মামির ঘরে ছিলাম। মামি নুন আনতে যাওয়ার পরই বিকট শব্দে বোমা ফাটে।”
প্রাথমিক তদন্তের পর ধুবুলিয়া থানার পুলিশের দাবি, বুধবার দুপুরে অপর্ণার দেওর মেঘনাদ ঘোষ ও পড়শি প্রভাস ঘোষ গ্রামের পাশে মাঠে সর্ষে কাটতে গিয়ে মাঠে বোমাটি পড়ে থাকতে দেখেন। তাঁরা বোমাটি তুলে এনে বাড়িতে রেখেছিলেন। অপর্ণা বুঝতে না পেরে নাড়াচাড়া করতেই হাত থেকে পড়ে সেটি ফেটে যায়। ঘরে বিস্ফোরক মজুত রাখার অভিযোগে পুলিশ মেঘনাদ আর প্রভাসকে গ্রেফতার করেছে।
বৃহস্পতিবার সকালে এই বোমা বিস্ফোরণের খবর ছড়িয়ে পড়তেই রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়েছে। বেলপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপির দখলে। দীর্ঘ দিন ধরেই এই এলাকায় তাদের প্রভাব আছে। তবে তৃণমূলের দাবি, আহতের পরিবার তাদের সমর্থক।
স্থানীয় বাসিন্দা, তৃণমূলের জেলা পরিষদের সদস্য সুব্রত ঘোষের দাবি, “আহতের স্বামী আমাদের সঙ্গেই আছেন। ভোটের আগে এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে বিজেপি তাদের নিশানা করে বোমা মেরেছে।”
বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার মিডিয়া আহ্বায়ক সন্দীপ মজুমদার পাল্টা বলেন, “বিজেপি যদি বোমা-গুলি ব্যবহার করত, তা হলে আমাদের এত কর্মী খুন হত না। খোঁজ নিয়ে দেখুন, তৃণমূল বোমা মজুত করছিল। তা ফেটেই এই বিপত্তি।”